হাসপাতালে ভর্তি পরিজন। টাকার দরকার। কিন্তু নগদ টাকা নেই। হাসপাতাল ছেড়ে ব্যাঙ্কে লাইন দিতেও যাওয়া যাচ্ছে না।
সীমান্তে পাহারায় রয়েছেন জওয়ানেরা। সামনে এটিএম কিংবা ব্যাঙ্ক নেই। কিন্তু বাড়িতে মা অসুস্থ। টাকা পাঠাতে হবে।
এ রকমই নানা সমস্যা এড়াতে বনগাঁ হাসপাতাল এবং বনগাঁর সীমান্তে ভ্রাম্যমাণ ব্যাঙ্ক পরিষেবা চালু করল বনগাঁর স্টেট ব্যাঙ্ক। সোমবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত দুই জায়গায় শিবির করে এই পরিষেবা দেন ব্যাঙ্ক কর্মীরা।
বনগাঁর স্টেট ব্যাঙ্কের মুখ্য ম্যানেজার প্রসীদ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আজ দুই জায়গায় ভ্রাম্যমান পরিষেবা থেকে ১ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা গ্রাহকদের দেওয়া হয়েছে। হরিদাসপুরে ৬২ জন জওয়ান টাকা তুলেছেন। সকলকে একশো টাকার নোট দেওয়া হয়েছে। সে সব এলাকায় মানুষ ব্যাঙ্কে যেতে পারছেন না তাঁদের কাছে পৌঁছে যেতেই এই ব্যবস্থা। ভবিষ্যতে ফের বিএসএফ ক্যাম্প ও হাসপাতালে ব্যাঙ্ক পরিষেবা নিয়ে যাওয়া হবে।’’
সোমবার দুপুর ১২টার সময়ে একটি গাড়ি নিয়ে ব্যাঙ্ক কর্মীরা বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে পৌঁছে যান। ব্যাঙ্ক কর্মীরা জানিয়েছেন, একটি নির্দিষ্ট যন্ত্রের মাধ্যমে ওই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। গ্রাহকেরা ওই যন্ত্রে টাকার পরিমাণ এবং নিজেদের এটিএম কার্ডের পিন নম্বরটি টাইপ করলে একটি স্লিপ বেরিয়ে আসছে। সেই স্লিপ দেখে নগদ টাকা দেওয়া হচ্ছে। এ দিন হাসপাতালে ওই পরিষেবা পেয়ে রোগীর আত্মীয় ছাড়াও চিকিৎসক এবং নার্সদের মধ্যে উৎসাহ তৈরি হয়। হাসপাতাল সুপার শঙ্কর প্রসাদ মাহাতো নিজেও সেখান থেকে টাকা তোলেন। অন্য চিকিৎসকদেরও লাইনে দাঁড়াতে দেখা যায়। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘দিন কয়েক ধরে কাজ শেষ করে যখন এটিএম যাচ্ছিলাম তখন টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছিল। আজ হাসপাতালে বসেই টাকা তুলতে পারব, ভাবতে পারিনি। রোগীর আত্মীয়রাও এতে উপকৃত হবেন।’’ বনগাঁ শহরের শক্তিগড় এলাকার বাসিন্দা টিঙ্কু সরকার তাঁর এক পরিচিতকে বনগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। তাঁর কাছে টাকা ছিল না। হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ ব্যাঙ্ক পাওয়ায় তিনি দু’হাজার টাকা তুলতে পেরেছেন। হাসপাতালের নার্স শিল্পী দেবনাথ বলেন, ‘‘হাসপাতাল চত্বরে কোনও এটিএম নেই। খুব অসুবিধা হচ্ছিল। আজ ব্যাঙ্ককে হাতের সামনে পেয়ে গেলাম।’’
দুপুর ২টো পর্যন্ত হাসপাতাল চত্বরে পরিষেবা দেওয়ার পরে ব্যাঙ্ক কর্মীরা পেট্রোপোল সীমান্তে চলে যান। সেখানে হরিদাসপুর ও জয়ন্তীপুর বিএসএফ ক্যাম্পের জওয়ানেরা লাইন দিয়ে টাকা তোলেন। এক জওয়ানের কথায়, ‘‘বাড়িতে মা অসুস্থ টাকা পাঠাতে পারছিলাম না। আজ ক্যাম্পের কাছেই ব্যাঙ্ক চলে আসায় সুবিধা হল।’’