শুশ্রূষা: জ্বর নামানোর ঘরোয়া দাওয়াই। ছবি: নির্মল বসু
জ্বরে পুড়ছে গা।
বাদুড়িয়ার রামচন্দ্রপুর এবং খাসপুর-সহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামে হাজারের উপরে মানুষ আক্রান্ত। বসিরহাট মহকুমা জুড়েও বাড়ছে জ্বরের প্রকোপ। বসিরহাট জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ৫ জনের রক্ত পরীক্ষার জন্য বারাসত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জ্বর নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে গ্রামে গ্রামে প্রচার চলছে বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্য আধিকারিক। পুরসভা এবং পঞ্চায়েতগুলিকে সজাগ থাকার কথা বলা হয়েছে।
মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মাসখানেক ধরে বাদুড়িয়ার রামচন্দ্রপুর-উদয় পঞ্চায়েতের রামচন্দ্রপুর ও খাসপুর গ্রামে জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। প্রথম দিকে হাত-পা ব্যথা, গা বমি বমি ভাব, মাথা যন্ত্রণা দিয়ে শুরু। এরপরে ক্রমশ জ্বরের পারদ চড়ছে উপরের দিকে। সম্প্রতি ওই পঞ্চায়েত এলাকায় একটি স্বাস্থ্য শিবির খোলা হয়। সেখানে লম্বা লাইন দিচ্ছেন জ্বর-গায়ে অনেকে। অনেকে বারাসাত, বসিরহাট বা বাদুড়িয়ার রুদ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালেও ভর্তি।
এ দিন রামচন্দ্রপুরে গিয়ে দেখা গেল, হাতুড়ে চিকিৎসক নজরুল ইসলামের কাছে অন্তত ২০ জন জ্বর নিয়ে এসেছেন। নজরুল বলেন, ‘‘অনেকের গায়ে র্যাশও বেরোচ্ছে। মনে হচ্ছে ভাইরাল জ্বর।’’
দশ-বারো দিন ধরে অসুস্থ কুতুবুদ্দিন মণ্ডল, সালেমা বিবি, সৌরদীপ মণ্ডল, সাহিদা বিবি, কাজল কর্মকার। তাঁরা জানালেন, রামচন্দ্রপুর থেকে প্রায় দু’কিলোমিটার গেলে স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকের অভাবে বেশির ভাগ মানুষ পঞ্চায়েতের স্বাস্থ্যশিবির, নয় তো হাতুড়ে চিকিৎসকের বাড়িতে যাচ্ছেন। পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যাচ্ছে মনে করলে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতাতলে।
এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে মাত্র ৫০ কেজি ব্লিচিং পেয়েছেন এবং তা গ্রামে গ্রামে ছড়ানোও হয়েছে জানিয়েছেন পঞ্চায়েতের প্রধান রবিউল হক। তাঁর কথায়, ‘‘বহু মানুষের জ্বর হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত সংখ্যাটা কমপক্ষে হাজার। জ্বর সারলেও দুর্বলতা থাকছে। অনেক পরিবারেই কাজকর্ম বন্ধ।’’
প্রধান জানান, এখনও পর্যন্ত মাত্র একজন সরকারি চিকিৎসক এসেছেন। তা-ও আবার সপ্তাহে তিন দিন সামান্য কয়েক ঘণ্টার জন্য রোগী দেখছেন তিনি। ফলে গরিব মানুষ রীতিমতো সমস্যায় পড়েছেন। পঞ্চায়েতে একজন স্থায়ী সরকারি চিকিৎসক দরকার বলে মনে করেন তিনি। সেই সঙ্গে আরও বেশি পরিমাণ ব্লিচিং পাউডার ও মশা মারার অন্যান্য উপকরণ দরকার বলে প্রধানের মত।