গাছ কাটায় মদত, অভিযুক্ত মুকুল-শান্তনু 

বেআইনি ভাবে গাছ কাটার অভিযোগ উঠল বিজেপি নেতা মুকুল রায়, অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:১৭
Share:

পড়ে আছে কাটা গাছ। —ফাইল চিত্র।

বেআইনি ভাবে গাছ কাটার অভিযোগ উঠল বিজেপি নেতা মুকুল রায়, অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে।

Advertisement

রবিবার সকালে গাইঘাটার তৃণমূল নেতা ধ্যানেশনারায়ণ গুহ তিন জনের বিরুদ্ধে ওই মর্মে গাইঘাটা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। পাশাপাশি ওই একই বিষয়ে থানায় এ দিনই স্মারকলিপি দিয়েছেন এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগপত্রটি বন দফতরের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারাই তদন্ত করে পদক্ষেপ করবে। পুলিশ জানিয়েছে, মুকুল, শান্তনু ছাড়া অভিযোগ করা হয়েছে তপন সিংহের বিরুদ্ধে। তপনকে মুকুলের সঙ্গেই দেখা যায় বেশির ভাগ সময়। বাড়ি গোবরডাঙায়।

Advertisement

লিখিত অভিযোগে ধ্যানেশ জানিয়েছেন, ৩১ জানুয়ারি ঠাকুরবাড়ি এলাকায় তাঁর নজরে পড়ে, কিছু লোক বড় বড় গাছ কাটছে। তিনি কাঠুরেদের কাছে জানতে চান, কারা গাছ কাটতে বলেছে। ধ্যানেশ বলেন, ‘‘কাঠুরেরা জানিয়েছেন মুকুল রায়, শান্তনু ঠাকুর ও তপন সিংহের নির্দেশে গাছ কাটা হচ্ছে। ৩৫-৪০টি গাছ কাটা হয়েছে। বন দফতরের অনুমতি ছাড়াই এই কাজ করা হয়েছে।’’ কাটা গাছের মূল্য প্রায় ৩-৪ লক্ষ টাকা বলে দাবি ধ্যানেশের। তাঁর আরও অভিযোগ, গাছ কাটার সময়ে ওই তিন জন উপস্থিত ছিলেন।

স্মারকলিপিতে জানানো হয়েছে, ২ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরনগরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভার জন্য মাঠ, মঞ্চ ও হেলিপ্যাড তৈরির জন্য গাছ কাটা হয়েছে। যা পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করেছে। এর আগে ৩০ জানুয়ারি এলাকার কিছু লোক মহকুমাশাসকের কাছে গাছ কাটার অভিযোগ করেছিলেন।

তৃণমূল নেতার অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ হিসাবে দেখছে বিজেপি। দলের বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি বিপ্লব হালদার বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সভায় মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ভিড় দেখে তৃণমূল ভয় পেয়েছে। তাই এখন মিথ্যে অভিযোগ করছে।’’ প্রধানমন্ত্রীর সভার প্রস্তুতির জন্য কয়েকটি গাছের ডাল ছাঁটা হয়েছিল বলে তাঁর দাবি।

শান্তনু বলেন, ‘‘ধ্যানেশ এর আগেও আমার নামে চুরির মিথ্যে অভিযোগ করেছিলেন। আমার বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করেছিলেন। মতুয়া মেলার টাকা তছরুপ করেছেন ধ্যানেশ। এখনও মিথ্যা কথা বলছেন। কোথাও কোনও গাছ কাটা হয়নি।’’ ধ্যানেশ বলেন, ‘‘মেলার টাকা চেকে দিয়েছিলাম। আসলে ওঁরাই টাকার হিসাব দেন না। গাছ কাটা নিয়ে ফেঁসে গিয়ে মিথ্যে অভিযোগ তুলছেন।’’

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, কিছু গাছ কাটা পড়েছে। তবে তার মধ্যে দু’টি গাছ এক মহিলার। তিনি বলেন, ‘‘আমরাই অনুমতি দিয়েছিলাম দু’টি গাছ কাটার জন্য।’’

যশোর রোড সম্প্রসারণের জন্য গাছ কাটার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছেন বহু মানুষ। তাঁদের কয়েক জন বললেন, ‘‘এটা দেখে ভাল লাগছে, তৃণমূল গাছ কাটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে। আশা করব ভবিষ্যতে জেলার যেখানেই গাছ কাটা হবে, তাঁরা এ ভাবেই প্রতিবাদ করবেন।’’

এ বিষয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বক্তব্য, ‘‘মানুষ-পশু খুন করা আর গাছ কাটা সমান অপরাধ। আমরা গাছ কাটার বিরুদ্ধে। যেখানেই গাছ কাটা হবে, আমরা বিরোধিতা করব। সবুজকে বাঁচাতেই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন