Panihati

Panihati: সতর্কতার শিক্ষা দিয়ে গেল দণ্ড মহোৎসব, মত পুরকর্তাদের

পানিহাটি পুরসভায় মৃতদের পরিবারের হাতে তিন জনের জন্য দু’লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন মহকুমাশাসক অভ্র অধিকারী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২২ ০৮:২১
Share:

ফাইল চিত্র।

তিন জন মারা যাওয়ায় এবং শতাধিক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ায় পানিহাটির দণ্ড মহোৎসব থেকে শিক্ষা নিল পুর প্রশাসন। পুর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে‌ন, ভিড় হয়, এমন যে কোনও অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। ওই উৎসবে সুভাষচন্দ্র পাল, তাঁর স্ত্রী শুক্লা পাল ও ছায়া দাসের মৃত্যুর কারণ ‘হাইপক্সিয়া’ (শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা দ্রুত কমে যাওয়া) বলে ময়না-তদন্তের রিপোর্টে জানা গিয়েছে।

Advertisement

রবিবার ৫০৬তম দণ্ড মহোৎসবে এই তিনটি মৃত্যু ও অগণিত ভক্তের অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণ হিসেবে প্রবল গরমকেই দায়ী করা হয়েছে আয়োজকদের তরফে।লাগামছাড়া ভিড়ের সুযোগে মহোৎসবতলা ঘাটের কাছে মহিলাদের গলা থেকে সোনার হার ছিঁড়ে নেওয়া এবং পকেটমারির ঘটনাও ঘটেছে বিস্তর। অসুস্থ হয়ে পড়া অনেকেরই দাবি, তাঁদের টাকা বা আংটি খোয়া গিয়েছে। গত তিন দিনে ওই এলাকারই আশপাশে বেশ কিছু জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে মোট ১৭ জন পকেটমারকে বমাল গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ঘটনার পরেই মুখ্যমন্ত্রী জেলাশাসক ও ব্যারাকপুর কমিশনারেটের কাছে জানতে চান, কেন এমন ঘটল? প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকদের কয়েক জন ঘটনার সময়ে সেখানে ছিলেন। পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা, যুগ্ম কমিশনার (সদর) ধ্রুবজ্যোতি দে,জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদীও কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেখানে পৌঁছে নিজেরাই ভিড় সরাতে শুরু করেন। সাধারণত গঙ্গার ধারে যে ভাবে হাওয়া বয়, সে দিনের গুমোট গরমে তা-ও বইছিল না। অকুস্থলে থাকা পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে কার্যত সে দিনের ঘটনার ‘ময়না-তদন্ত’ করা হয় কমিশনারেট ও জেলা প্রশাসনের তরফে। মন্দিরের পুরোহিত ও স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলেন পুলিশকর্তারা। কেন এমন হল, সেই তদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, যে সময়ে ওই তিন পুণ্যার্থী মারা গিয়েছেন, তখন ভিড়থাকলেও তা চলমান ছিল। তবে মন্দিরে তখন আরতি চলায় ধুনোর ধোঁয়ায় ভরে ছিল মন্দিরের সামনের অংশ আর নাটমন্দির। নাটমন্দিরেই বসে ছিলেন সুভাষবাবুরা। গঙ্গার দিক থেকে আসা স্বাভাবিক বাতাসও তখন থমকে ছিল। ধুনোর তীব্রগন্ধ, ভক্তদের ধ্বনি, কলরব— সব মিলিয়ে অসুস্থ বোধ করছিলেন অনেকেই। হাইপক্সিয়ার কারণে সুভাষবাবুদের হাসপাতালে নেওয়ার সময়টুকুও মেলেনি। চিকিৎসক অর্ণব বিশ্বাসের মতে, দমবন্ধ করা পরিস্থিতিতে ওই তিন জনের সম্ভবত হিট স্ট্রোক হয়েছিল। তা থেকেই হাইপক্সিয়া ও মৃত্যু।

Advertisement

ব্যারাকপুর কমিশনারেটের যুগ্ম কমিশনার (সদর) বলেন, ‘‘কোনও দায় ঠেলা নয়। কেন এই ঘটনা ঘটল, বিভাগীয় তদন্তে তার চুলচেরা বিশ্লেষণের পাশাপাশি ভবিষ্যতে আরও অনেক বেশি সতর্কতার দিকগুলিও খোঁজা হয়েছে।’’

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো এ দিন পানিহাটি পুরসভায় মৃতদের পরিবারের হাতে তিন জনের জন্য দু’লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন মহকুমাশাসক অভ্র অধিকারী। সুভাষবাবু ও শুক্লাদেবীর মেয়ে মীনাক্ষী বণিক বলেন, ‘‘বাবা-মা একসঙ্গে চলে গেলেন। কী ভাবে যে গেলেন, তা তো নিজের চোখে দেখিনি। তাই যা শুনছি, তা-ই ঠিক বলে মানতে হবে।’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন