সাফাই অভিযান চলছে, দাবি পুরসভার

মশার হানা ঠেকাতে দিনেও বন্ধ জানলা

গত বছর এই এলাকায় ১২ জন ডেঙ্গি-আক্রান্ত হয়েছিলেন। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল অনেককে। এ বার এখনও কারও ডেঙ্গি বা মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর নেই বলে পুরসভার দাবি। তবু রাস্তায় বেরোলেই দেখা যাচ্ছে, দিনের বেলাতেও অনেক বাড়ির দরজা-জানলা বন্ধ।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ০১:১৭
Share:

নজর: মশার লার্ভার খোঁজ। ছবি: শান্তনু হালদার

বছর ঘুরে বর্ষা হাজির। তবু এ বারও মশার হাত থেকে রেহাই মিলছে না অশোকনগর-কল্যাণগড় পুর এলাকার বাসিন্দাদের।

Advertisement

গত বছর এই এলাকায় ১২ জন ডেঙ্গি-আক্রান্ত হয়েছিলেন। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল অনেককে। এ বার এখনও কারও ডেঙ্গি বা মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর নেই বলে পুরসভার দাবি। তবু রাস্তায় বেরোলেই দেখা যাচ্ছে, দিনের বেলাতেও অনেক বাড়ির দরজা-জানলা বন্ধ। প্রশ্ন করলে উত্তর মিলছে, ‘‘কী করব? মশার হাত থেকে এ ছাড়া বাঁচার উপায় নেই যে!’’

পুরসভা অবশ্য দাবি করেছে, মশার উপদ্রব ঠেকাতে মে মাস থেকে নিকাশি নালা পরিষ্কার এবং এলাকার জঙ্গল সাফাই অভিযান শুরু হয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন মশার হাত থেকে রেহাই মিলছে না, এ প্রশ্ন উঠছেই। পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের চিত্তরঞ্জন বিশ্বাসের অভিযোগ, ‘‘পুরসভা থেকে নিয়মিত নিকাশি নালা সাফাই হয় না। নানা এলাকা বন-জঙ্গলে ভরে গিয়েছে। মাঝেমধ্যে চুন বা ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হলেও তা নিম্নমানের। ফলে, কোনও কাজ হয় না।’’

Advertisement

পুর কর্তৃপক্ষ অভিযোগ মানেননি। পুরসভার দাবি, মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য ২৩ জন সুপারভাইজার নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁরা এলাকায় ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করছেন। এলাকার স্কুল-কলেজগুলিতে ব্লিচিং পাউডার ও চুন ছড়ানো হচ্ছে। এমন উদ্যোগ আগে হয়নি।

পুরপ্রধান প্রবোধ সরকারের দাবি, ‘‘মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে ৮১টি দল গড়া হয়েছে। দলের সদস্যেরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষকে বোঝাচ্ছেন, মশাবাহিত রোগ কী ভাবে ছড়াতে পারে। দলের মহিলাদের টর্চ ও হাতা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা পুর এলাকার বাড়িতে জমা জল সংগ্রহ করে মশার লার্ভা আছে কিনা দেখছেন।’’

পুরসভার মোট ২৩টি ওয়ার্ডে ১০ হাজারেরও বেশি পরিবার বসবাস করেন। বাসিন্দাদের অনেকেই মনে করেন, মশার দৌরাত্ম্যের অন্যতম প্রধান কারণ, নিকাশি নালাগুলি নিয়মিত পরিষ্কার না-হওয়া। বৃষ্টিতে নালাগুলি ভরে ওঠে। তাতেই মশা বংশবৃদ্ধি করে। রাস্তার আবর্জনাও নিয়মিত সাফাই হয় না। অনেক পাড়ার মুখেই দেখা যায় জঞ্জালের স্তূপ। ভ্যাট থেকে নোংরা উপচে পড়ছে। রয়েছে জঙ্গলের বাড়বাড়ন্তও।

তা ছাড়া, অল্প বৃষ্টিতেই ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের শ্মশান সংলগ্ন এলাকা, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বাইগাছি, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের খালপাড়া, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিনিময় পাড়া, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কায়পুত্র পাড়া, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের নিরঞ্জন সরোবর, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের নবজীবন পল্লি, ডোবা কলোনির মতো এলাকায় জল জমে। সেই জল বেরনোর কোনও ব্যবস্থা নেই। ফলে, মশার উপদ্রব বাড়ে বর্ষায়। আগে ওই সব এলাকার জমা জল গুমা ও বিদ্যাধরী খাল হয়ে বেরিয়ে যেত। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরেই খাল দু’টি বেহাল।

খাল সংস্কার নিয়ে ইতিমধ্যেই সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে বলে দাবি পুর কর্তৃপক্ষের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement