আফসানা বিবি।
প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছিলেন এক যুবক। যৌতুকের দাবিতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি বসিরহাটের কাঁকড়া মির্জানগর গ্রামের। গুরুতর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় আফসানা বিবিকে (২১) বারাসত হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সোমবার সকালে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতের দাদার অভিযোগের ভিত্তিতে একটি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রধান অভিযুক্ত আলাউদ্দিন সর্দার এবং পরিবারের সকলে পলাতক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মিনাখাঁর আবাদ মালঞ্চ গ্রামের আফসানা বিবির সঙ্গে বছরখানেক আগে মোবাইলের মাধ্যমে পরিচয় হয় কাঁকড়া মির্জানগর গ্রামের আলাউদ্দিনের। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেম হয়। সে কথা জানতে পেরে আফসানার পরিবার থেকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয় আলাউদ্দিনের পরিবারে। সাত মাস আগে বিয়েও হয় দু’জনের।
পুলিশ জানায়, কয়েক দিন কাটার পরেই আলাউদ্দিনের প্রথম স্ত্রীর কথা জানতে পারেন আফসানা। শুরু হয় অশান্তি। বিয়েতে যৌতুক বাবদ জামাইয়ের চাহিদা পূরণ করা হলেও আরও টাকার দাবিতে স্ত্রীর উপরে আলাউদ্দিন চাপ বাড়াতে থাকে বলে অভিযোগ। শুরু হয় মারধর।
পুলিশের কাছে করা অভিযোগ আফসানার দাদা গফ্ফর গাজি বলেন, ‘‘আমাদের ন’ভাইবোনের মধ্যে সব থেকে ছোট আফসানা। সকলের আদরের বোনের বিয়েতে আমরা সাধ্যের বাইরে গিয়ে খরচ করেছিলাম। বিয়ের কয়েক দিন পরে জানা যায়, আলাউদ্দিনের আরও একটা স্ত্রী আছে। সে কথা গোপন করেছিল। আরও পণের দাবিতে অত্যাচারের মাত্রাও বাড়তে থাকে। আলোচনা করেও সমাধান সূত্র বেরোয়নি।’’
আফসানার ভাই কারিবুল্লা গাজি বলেন, ‘‘গত বৃহস্পতিবার রাত একটা নাগাদ জামাইবাবু দিদিকে প্রচণ্ড মারধর করেন। গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। তখন হাসপাতালে পর্যন্ত ভর্তি করা হয়নি। পরদিন শুক্রবার প্রতিবেশীরা জানতে পেরে বোনকে বারাসত হাসপাতালে ভর্তি করে। সোমবার সকালে তার মৃত্যু হয়।’’
আলাউদ্দিন অবশ্য গোপন ডেরা থেকে দাবি করেছে, ঝগড়াঝাটির জেরে ঘরে ঢুকে গায়ে আগুন দেন স্ত্রী নিজেই। পুলিশ দেহ ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে।