টাকা চেয়েও পাননি স্বামী, স্ত্রীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ

ইন্দিরা আবাস যোজনায় টাকা পেয়েছিলেন স্ত্রী। ওই টাকা থেকে কুড়ি হাজার টাকা স্বামী চেয়েছিল। সেই টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীকে বাঁশের মগুর দিয়ে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল সতীশ শবর নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বাগদার আমডোব এলাকার আদিবাসী পাড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম মীনা শবর (৪৬)। বাড়ি ওই এলাকায়। স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে পুলিশ এ দিন সকালেই সতীশকে গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাগদা শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৫ ০২:০৬
Share:

এই ঘরের সামনেই খুন হয়েছেন মীনা। নিজস্ব চিত্র।

ইন্দিরা আবাস যোজনায় টাকা পেয়েছিলেন স্ত্রী। ওই টাকা থেকে কুড়ি হাজার টাকা স্বামী চেয়েছিল। সেই টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীকে বাঁশের মগুর দিয়ে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল সতীশ শবর নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বাগদার আমডোব এলাকার আদিবাসী পাড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম মীনা শবর (৪৬)। বাড়ি ওই এলাকায়। স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে পুলিশ এ দিন সকালেই সতীশকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সতীশের চোলাইয়ের নেশা ছিল। যার প্রতিবাদ করায় মাঝে মধ্যেই স্ত্রীর সঙ্গে তার ঝামেলা হত। এই বিষয় নিয়েও সতীশ স্ত্রীর উপর রেগে ছিল। সতীশের দুটি বিয়ে। তার আরও এক স্ত্রী থাকেন মেদিনীপুরে। এ দিন সকালে তার দুই ছেলে ও মেয়ে গিয়েছিল কাছেই এক বিলে মাছ ধরতে। বাড়িতে ছিল মীনা এবং সতীশ। মদ্যপ অবস্থায় মীনার কাছে ওই টাকা চায় সে। তা নিয়ে তাঁদের মধ্যে বচসা বাধে। ওই সময় একটি বাঁশের মুগুর দিয়ে মীনার মাথায় আঘাত করে সতীশ বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

Advertisement

এ দিন দুপুরে বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, কলের পাশে রক্তের দাগ। বাড়িতে কেউ নেই। সকলেই থানায় গিয়েছে। সতীশের ছেলের বৌ প্রতিমা জানালেন, ‘‘ শ্বশুরমশাই কোনও কাজ করতেন না। তিনি দিনরাত চোলাই খেয়ে শাশুড়ি মাকে মারধর করতেন। চোলাই খাওয়া নিয়ে মায়ের সঙ্গে প্রায়ই আশান্তি হত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গোটা এলাকার চোলাইয়ের ভাটি তুলে দিলে কোনও পরিবারেই আর আশান্তি থাকবে না। কাউকে এ ভাবে আর মরতে হবে না।’’ বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গ্রামেই রয়েছে চোলাইয়ের ভাটি। রোজ রাতে চোলাই তৈরি হয়। ভোরে তা মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে যায়। এলাকার মানুষের আয়ের বেশির ভাগ টাকা চোলাইয়ের পিছনে চলে যায়। মীনাদেবীর বৃদ্ধা মা যশোধা বলছিলেন, ‘‘আমার মেয়েই কাজ করে সংসার চালাত। উল্টে চোলাই খেয়ে এসে সতীশ আমার মেয়েকে মারধর করত। ওর যেন ফাঁসি হয়।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, বাড়ি তৈরির জন্য দ্বিতীয় কিস্তির ৪২ হাজার টাকা সম্প্রতি ঢুকেছিল মীনাদেবীর অ্যাকাউন্টে। সেই টাকারই ভাগ চাইছিল সতীশ। পুলিশ জানিয়েছে, এলাকা থেকে চোলাইয়ের কারবার বন্ধ করতে এ বার জোর অভিযান চালানো হবে। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য বনগাঁ মহকুমা হাসপতালে পাঠানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন