বৃদ্ধের ঝুলন্ত দেহ, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর

পুলিশ জানিয়েছে, জনতার ক্ষোভের মুখ থেকে ওই বৃদ্ধার ছেলে-বৌমা ও তাঁর বাবাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৮ ০২:১৯
Share:

ভাঙচুর: পুলিশের গাড়িতে চড়াও। —নির্মাল্য প্রামাণিক

এক বৃদ্ধের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পর রণক্ষেত্রের আকার নিল এলাকা। মৃতদেহ উদ্ধার করতে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়ল পুলিশ। পুলিশের লাঠি দিয়েই ভাঙা হয় পুলিশের গাড়ির কাচ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁর বক্সীপল্লি এলাকায়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, সুধাংশু বিশ্বাস (৬৭) নামে ওই বৃদ্ধের মৃত্যুর পিছনে তাঁর ছেলে-বৌমা ও বৌমার বাবার ভূমিকা রয়েছে। সে জন্য জনতার হাতে তাঁদেরকে তুলে দিতে হবে। পুলিশ তা না মানায় পুলিশের উপর চড়াও হয় জনতা।

পুলিশ জানিয়েছে, জনতার ক্ষোভের মুখ থেকে ওই বৃদ্ধার ছেলে-বৌমা ও তাঁর বাবাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস তিনেক আগে সুধাংশুবাবুর স্ত্রী আত্মহত্যা করেন। তাঁর এক ছেলে ও মেয়ে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছেলে বিরাটিতে থাকেন। একটি কলেজে পড়ান। বনগাঁতে সুধাংশুবাবুর বাড়ি ছিল। কিছুদিন আগে বাড়ি বিক্রি করে তিনি ছেলের কাছে গিয়ে থাকছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে ফিরে এসে বক্সীপল্লি এলাকায় বাড়ি ভাড়া নেন। তিনি ঘড়ি মেরমতের কাজ করতেন।

ওই এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, ছেলে-বৌমা এবং তাঁর বাবার জন্যই ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। ওঁদের শাস্তি চাই। এ দিন বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর পেয়ে বৌমা ও তাঁর বাবা এলাকায় গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের প্রথমে বসিয়ে রাখেন। তাঁদের কটূক্তি করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের সঙ্গেও ক্ষিপ্ত জনতার ধস্তাধস্তি বেধে যায়। পুলিশের গাড়িতে থাকা লাঠি বের করে নিয়ে এসে গাড়ির কাচ ভাঙচুর করে জনতা। কোনও রকমে পুলিশ সুধাংশুবাবুর বৌমা ও তাঁর বাবাকে বার করে নিয়ে আসে। বৃদ্ধের ছেলে জানিয়েছেন, মা অসুস্থ ছিলেন। তাঁর ডায়ালসিস চলছিল। অসুস্থতার কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন। বাবার সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। এমনকী বাড়ি ভাড়ার টাকা তিনিই দিতেন। ছেলে বলেন, ‘‘ফ্ল্যাটে বাবা একা থাকতে পারতেন না। আমি কলেজে যেতাম। স্ত্রী পড়তে যেত। সে কারণে বক্সীপল্লি এলাকায় পরিচিত মানুষদের মধ্যে এসে বাবা থাকতে চেয়েছিলেন।’’ ছেলে আরও বলেন, ‘‘এ দিন সকালে কলেজ গিয়েছিলাম। তখন বাবা ফোন করে আমায় জানান, আমি চলে যাচ্ছি। আমি আত্মহত্যা করছি। তারপর ফোনের লাইন কেটে যায়।’’ ফোনে বাবার কাছ থেকে ওই কথা শুনে তিনি পরিচিত এক ব্যক্তিকে ভাড়া বাড়িতে পাঠিয়েছিলেন বলে দাবি। ওই ব্যক্তিই প্রথম সুধাংশুবাবুর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। একটি অস্বাভাবিক মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে
পুলিশ জানায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন