এই অপরাধের ক্ষমা হয় না, বলছেন গ্রামবাসী

শিশু পাচার চক্রে জড়িত গাইঘাটা বড়া গ্রামের বাসিন্দা তপনকুমার বিশ্বাসের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুললেন গ্রামবাসীরা। এমনকী জেল খেটে গ্রামে ফিরলেও তাকে আর গ্রামে থাকতে দেওয়া উচিত নয় বলেও তাঁরা মনে করছেন।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৪৩
Share:

শিশু পাচার চক্রে জড়িত গাইঘাটা বড়া গ্রামের বাসিন্দা তপনকুমার বিশ্বাসের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুললেন গ্রামবাসীরা। এমনকী জেল খেটে গ্রামে ফিরলেও তাকে আর গ্রামে থাকতে দেওয়া উচিত নয় বলেও তাঁরা মনে করছেন।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই অপরাধ মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। এর ক্ষমা হয় না। প্রশাসনের তাকে কঠোর সাজা দেওয়া উচিত।’’ রবিবার সকালে টিভিতে তপনের গ্রেফতারের খবর দেখে বাড়ির সামনে ভিড় করেছে গোটা গ্রাম।

তপনের মা সুধারানিদেবী বলেন, ‘‘লোকে টিভিতে দেখে আমাকে জানিয়েছেন, ছেলে ধরা পড়েছে।’’ তাঁর প্রশ্ন ছেলেকে কেউ ফাঁসিয়ে দিচ্ছে না তো? তাঁর কথায়, ‘‘আমরা জানতাম ছেলে বাদুড়িয়া-সহ বিভিন্ন এলাকার নার্সিংহোমে চিকিৎসা করে। বাড়িতে কেউ এলে সন্তান প্রসব করে দেয়। এর বেশি কিছু তো কোনও দিন শুনিনি।’’ মনমরা হয়ে বসেছিলেন স্ত্রী কণিকাদেবী। তিনি বলেন, ‘‘কয়েক বছর ধরে স্বামীর সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভাল নেই। বাড়িতে এসে নিজের মতো থাকত। শিশু পাচারের বিষয়ে আমরা বাড়ির কেউ কিছুই জানি না।’’

Advertisement

বুধবার সন্ধ্যায় সিআইডির চার সদস্যের একটি দল বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি চালায়। অক্সিজেন মেশিন, আলট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন তাঁরা খুঁজে পেয়েছেন। এলাকার মানুষের কৌতূহল তারপর থেকেই বেড়ে গিয়েছিল। তাঁর স্ত্রী কণিকাদেবী ও দাদা কপিলকেও সিআইডি জেরাও করেছে।

গ্রামবাসীরা জানায়, গভীর রাতে বাইরে থেকে গাড়ি করে প্রসূতিরা আসতেন। কখনও দেখা যেত ওই মহিলাদের তিনি গাড়ি করে কোথাও নিয়ে যাচ্ছেন। তপনের কাজকর্ম, চলাফেরা সবই ছিল সন্দেহজনক। বাড়িতেই গর্ভপাত করাত, ভ্রূণ নির্ণয়ও করতো বলে অভিযোগ।

বছর পনেরো আগেও গ্রামের মানুষের কাছে তপন একজন হাতুড়ে চিকিৎসক হিসাবেই পরিচিত ছিলেন। স্থানীয় এক চিকিৎসকের ব্যাগ বইতে দেখা যেত তাকে। তারপর কী ভাবে বড় ডাক্তার হয়ে গেল সে বিষয়টি অবশ্য গ্রামের মানুষের অজানা।

তবে গ্রামের প্রসূতিরা তার কাছে চিকিৎসার জন্য যেতেন না। রাতে বাড়ি থেকে শিশুদের কান্নার আওয়াজ ভেসে আসত বলেও জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা।

তপনের বাড়িতে দিনে রাতে দূরদূরান্ত থেকে প্রসূতিরা আসতেন। ওই চিকিৎসক এলাকার মানুষের সঙ্গে বিশেষ মেলামেশা করতেন না। এলাকার কিছু গাড়ি চালকের সঙ্গে তপনের চুক্তি ছিল। তার কাছে আসা রোগীদের বাদুড়িয়াতে পৌঁছে দিত তাঁরা। তাদের কাছ থেকে টাকাও নিত না তপন।

এ সব দেখেই গ্রামের মানুষের মনে সন্দেহ দানা বাঁধে। এখন তা স্পষ্ট হল বলে মনে করছেন গ্রামবাসীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন