নবরূপে: ক’দিন পরেই ভরে উঠবে স্টেডিয়াম। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
বিশ্বমানের মাঠ, আধুনিক ড্রেসিং রুম, প্রেস বক্স, ভিআইপি বক্স, উন্নত গ্যালারি, ফ্লাড লাইট—তৈরি সবই। এখন অপেক্ষা শুধু উদ্বোধনের।
নৈহাটিতে কিছু দিন আগে যেটা ছিল এঁদো মাঠ, সেটাই এখন আধুনিক স্টেডিয়াম। কিছু দিনের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর স্টেডিয়ামটি উদ্বোধন করার কথা। এমন একটি স্টেডিয়াম শহরের গৌরব অনেকটাই বাড়িয়েছে বলে মনে করছেন নৈহাটির বাসিন্দারা।
নৈহাটির কাঠগোলায় এই মাঠটিতে দীর্ঘ দিন ধরেই ক্রীড়াচর্চা হত। তবে কোনও পরিকাঠামো ছিল না। ফলে বর্ষায় যেমন জল জমত, তেমনই শক্ত মাটির মাঠ শীতে খেলার অনুপযুক্ত হয়ে পড়ত। অন্য কোনও সুবিধাও মিলত না। এলাকার বাসিন্দারা দীর্ঘ দিন ধরেই এখানে একটি উন্নতমানের স্টেডিয়ামের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। বাম আমলে প্রতিশ্রুতি মিললেও কাজের কাজ কিছু হয়নি।
প্রশাসন সূত্রের খবর, বছর তিনেক আগে এলাকার বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্টেডিয়ামের জন্য আবেদন পাঠানো হয়। তারপরে মেলে অনুমোদন। সাড়ে ১৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে স্টেডিয়াম তৈরিতে। গ্যালারির আসন সংখ্যা সাড়ে ৭ হাজার।
আসন সংখ্যা বারাসত স্টেডিয়ামের থেকে কিছুটা কম হলেও পূর্ত দফতরের দাবি, মানের দিক থেকে এই স্টেডিয়ামের মাঠটি বারাসতের থেকে অনেক ভাল। তাঁদের দাবি, সল্টলেকের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের মানের মাঠ এটি। পার্থ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। তিনি সময় দিলেই স্টেডিয়ামের উদ্বোধন হবে। আমরা চাইব, বড় দলের খেলা যাতে এই স্টেডিয়ামে হয়।’’
পূর্ত দফতরের ব্যারাকপুর ডিভিশন স্টেডিয়ামটি তৈরি করেছে। ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র অরুণ মহাজন জানান, পুরো স্টেডিয়ামটি ২২ হাজার বর্গমিটার জমির উপরে তৈরি। মাঠের মাপ সাড়ে ন’হাজার স্কোয়ার মিটারেরও বেশি। ক্রিকেট এবং ফুটবল দু’রকম খেলার আয়োজন করা যাবে এই মাঠে। ক্রিকেটের পিচও তৈরি করা হয়েছে।
সল্টলেক স্টেডিয়ামের মাঠ তৈরি করেছে যে সংস্থা, সেই সংস্থাকে দিয়েই তৈরি করা হয়েছে নৈহাটি স্টেডিয়ামের মাঠ। লাগানো হয়েছে ‘বারমুডা ঘাস’। যুবভারতী স্টেডিয়ামে যে পদ্ধতিতে মাটির উপরে বালির স্তরে ঘাস বসানো হয়েছে, সেই একই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে এখানে। মাঠের নীচে জল নিষ্কাশনেরও ব্যবস্থা রয়েছে।
স্টেডিয়ামের মধ্যে থাকছে খেলোয়াড়দের ড্রেসিংরুম, তাঁদের পৃথক লকার। মাঠের চার কোণে চারটি ফ্লাড লাইট রয়েছে। রয়েছে প্রেস বক্স, ভিআইপি বক্স এবং কমেন্ট্রি বক্স। পূর্ত দফতরের দাবি, এই মাঠে জাতীয় স্তরের ম্যাচ আয়োজন করা যেতে পারে। উদ্বোধনের পরে স্টেডিয়ামটি নৈহাটি পুরসভাকে হস্তান্তর করা হবে। তারাই দেখভাল করবে।