এক সঙ্গীকে নিয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সেলুনের কাচের দরজা ঠেলে ঢুকলেন এক তরুণ। কথার টানে হেয়ার ড্রেসার যুবকটি বুঝে গেলেন ক্রেতা এসেছেন বনগাঁ থেকে। শ্যামল সেন নামে ওই যুবক চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে বললেন, ‘‘ক্র্যু কাট টেনে দ্যান।’’ চলতে লাগল কাচি।
বসিরহাটের তন্ময় দাস ব্যারাকপুরের একটি নামী সেলুনে এসেও বললেন ক্র্যু কাটের কথা। এ বার পুজোয় ছেলেদের চুলের স্টাইলে ‘ইন থিঙ্গ’ হল এই ‘ক্রু কাট’। বারাসতের এক সেলুনের কর্মকর্তা সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়ও সে ব্যাপারে সহতম।
ক্রু কাটের ক্ষেত্রে সুমনবাবু জানান, মাথার পিছনের দিকে ও পাশের চুলগুলি ট্রিম করে কাটা হয়। আর সেখান থেকে উপরের দিকে ক্রমশ চুল বড় ও কিছুটা খাড়া থাকে। এই স্টাইল কয়েক বছর ধরেই গরমে বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
নিজের মুখমণ্ডল, শরীরের গড়ন, পেশা— এগুলোর উপরে নির্ভর করেই চুলের স্টাইল করা উচিত, মনে করেন বহু হেয়ার স্টাইলিস্ট। হেয়ার স্টাইলিস্ট রজত-কৌশিক জানালেন, সব ধরনের চুলের স্টাইল সকলকে মানাবে, এমন নয়। ছেলেদের হেয়ার কাটের মধ্যে অনেক কাটই এখন জনপ্রিয় হয়ে রয়েছে। যেমন, স্পাইক, ফেড, ক্ল্যাসিক, বাজ। কিন্তু সব কিছুকে এখন পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে ক্র্যু কাট। কয়েকটি সেলুনের কর্মকর্তারা জানান, ছেলেরা চুলে বেশির ভাগই এখন এই ছাঁট দিচ্ছেন।
স্পাইক কাটের স্টাইল বেশি জনপ্রিয় কিশোর ও তরুণদের কাছে। সব দিকের চুলই ছোট করে কেটে হেয়ার জেল দিয়ে স্টাইল করা যায়। ফেড কাটে এই স্টাইলে পেছনে ও কানের ওপরে চুলটা একদম থাকেই না বলা চলে। কানের কমপক্ষে এক ইঞ্চি উপর থেকে আর পেছনে মাথার অর্ধেক উপর থেকে কাটা শুরু হয়।
ক্ল্যাসিক কাট হল পুরনো স্টাইল। ফরমাল পোশাকের সঙ্গে এটি সব থেকে ভাল যায়। চুলের একদিকে সিঁথি করে আঁচড়ানো হয়। মাঝবয়সী ব্যক্তিদের এই স্টাইল চেহারায় মার্জিত একটা লুক এনে দেবে বলে জানালেন বিশেষজ্ঞেরা।
খেলাধূলা ভালবাসেন, এমন মানুষজন বাজ কাট ভালবাসেন। খেলোয়াড় ও সৈনিকদের মধ্যে এই স্টাইল বেশি জনপ্রিয়। এই কাটে চুল ট্রিমার মেশিনে কাটা হয়। চুলের দৈর্ঘ্য থাকে এক ইঞ্চির চার ভাগের এক ভাগ। স্নানের পরেও এই চুল আঁচড়ানোর দরকার পড়ে না।
ছেলেদের হেয়ার কালারও স্টাইলের একটা বড় দিক। রজত-কৌশিকের মতে, এখন ছেলেদের ক্ষেত্রে গ্লোবাল কালার বেশি চলছে। ব্রাউন ফ্যাশনে ইন নয়। তবে লাল সব সময়েই ছেলেদের পছন্দের রঙ। তবে গায়ের রং বুঝে চুলে রঙ করা উচিত বলে মত হেয়ার স্টাইলিস্টদের।