স্কুল বলতে সাকুল্যে একটি ঘর ও বারান্দা

একটি ঘরে পাঁচটি ক্লাস।মুলদিয়া হালদার পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং কাদিপুকুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এভাবেই চলছে দৈনন্দিন পঠনপাঠন।মন্দিরবাজার ব্লকের দক্ষিণ বিষ্ণপুর পঞ্চায়েতের মুলদিয়া হালদার পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়টি আগে টালির চালের বাড়িতে চলত।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

মন্দিরবাজার শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৬ ০৬:২৪
Share:

চলছে ক্লাস। নিজস্ব চিত্র।

একটি ঘরে পাঁচটি ক্লাস।

Advertisement

মুলদিয়া হালদার পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং কাদিপুকুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এভাবেই চলছে দৈনন্দিন পঠনপাঠন।

মন্দিরবাজার ব্লকের দক্ষিণ বিষ্ণপুর পঞ্চায়েতের মুলদিয়া হালদার পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়টি আগে টালির চালের বাড়িতে চলত। ওই বাড়ির পাশে একটি নতুন বাড়ি তৈরি হয়। সেখানে রয়েছে ১৫ ফুট চওড়া এবং ২০ ফুট লম্বা একটি ঘর এবং বারান্দা। কথা ছিল, পুরনো বাড়ি এবং নতুন বাড়িতে ভাগাভাগি করে ক্লাস হবে। কিন্তু বছর চারেক আগে ঝড়-বৃষ্টিতে টালির চালের বাড়িটির একাংশ ভেঙে যায়। সেই থেকে নতুন বাড়ির একটি ঘরেই গাদাগাদি করে ক্লাস চলছে। একটি ঘরে সব ক্লাসের পড়ুয়াদের স্থান সঙ্কুলান সম্ভব নয়। তাই একটি ক্লাস হচ্ছে বারান্দায়। বর্তমানে এই স্কুলে ১০৫ জন ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে। প্রধান শিক্ষক-সহ দু’জন শিক্ষক এবং একজন পার্শ্বশিক্ষক রয়েছেন।

Advertisement

ঘরের পাশে রয়েছে মিড ডে মিলের রান্নাঘর। সেখানে কাঠের জ্বালানিতে রান্না হয়। স্কুলের কোনও পাঁচিল নেই। ফলে ঘর এবং বারান্দার চিৎকারের সঙ্গেই মিলে যায় রাস্তায় গাড়ির হর্ন এবং রান্নার ধোঁয়া! এখানেই শেষ নয়, স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাতে ওই বারান্দাতেই মদের আসর বসে। মাঝে মাঝেই সেখান থেকে মদের বোতল মেলে বলেও অভিযোগ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক গুরুপদ বৈদ্যের আক্ষেপ, ‘‘একটা ঘরে এত ছাত্রছাত্রীর বসাটাই সমস্যা। ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকদের মনোযোগে সমস্যা হয়। বৃষ্টি হলে এবং চড়া রোদে বারান্দায় বসা যায় না। স্কুল পরিদর্শক ঘুরে গিয়েছেন। জানি না কী হবে।’’

প্রায় একই অবস্থা এলাকায় চাঁদপুর চৈতন্যপুর পঞ্চায়েতে কাদিপুকুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। আগে ইটের দেওয়াল দেওয়া টালির ছাউনির ঘরে ওই স্কুলটি চলত। ওই বাড়িটি ভগ্নপ্রায় হয়ে যাওয়ায় পাশেই নতুন স্কুলবাড়ি তৈরির জন্য কয়েক লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। পুরনো স্কুল বাড়ির পাশেই নতুন স্কুলবাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়। কিন্তু জমি জটে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এর পর ২০১৩ সালের মার্চ মাস থেকে ওই স্কুলের পঠনপাঠন চলছে ওই গ্রামের হাইস্কুলের একটি ঘরে। সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত পঠনপাঠন চলে। আগে এখানে কয়েকশো ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করলেও এখন সেই সংখ্যা মাত্র ৪৪ জন। দু’জন শিক্ষক নিয়ে কোনওক্রমে স্কুলটি চলছে। মাসখানেক আগেও পুরনো স্কুল বাড়িটিতে মিড ডে মিলের রান্না হলেও এখন রান্নার কাজ বন্ধ। প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রজিত পুরকাইত বলেন, ‘‘স্কুলভবনটি সংস্কারের জন্য সরকারি সাহায্যের প্রয়োজন। বিষয়টি শিক্ষা দফতরে জানানো হয়েছে।’’

মন্দিরবাজার চক্রের প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক নবীন মালাকার বলেন, ‘‘কাদিপুকুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন বাড়ি তৈরির কাজ জমি জটে আটকে রয়েছে। তাই কিছু করা যাচ্ছে না। হালদারপাড়া স্কুলটির পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন