Murder

Birati Murder Case: একসময়ের প্রিয় বন্ধু বাবুলালের মদতেই কি খুন বিরাটির পিকুন?

নিয়মিত জিম করা চেহারার বাবুলাল এলাকায় ‘মাসলম্যান’ হিসাবেই পরিচিত। অভিযোগ, তিনি ভোটের আগে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াতে শুরু করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিরাটি শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২১ ১১:২২
Share:

শুভ্রজিৎ (বাঁদিকে), বাবুলাল (ডানদিকে) নিজস্ব চিত্র

একসময়ে গলায় গলায় বন্ধুত্ব ছিল। কিন্তু টাকা ধার দেওয়ার চক্করে সেই সম্পর্কে চিড় ধরে। সেই কারণেই বিরাটিতে শুভ্রজিৎ দত্ত ওরফে পিকুনকে খুন হতে হল বলে অভিযোগ করছেন শুভ্রজিতের আত্মীয় ও বন্ধুরা। খুনের অভিযোগ একসময়ে শুভ্রজিতের কাছের বন্ধু বাবুলালের বিরুদ্ধে।

Advertisement

শুভ্রজিতের বন্ধু থেকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁর সঙ্গে সমস্যা চলছিল বাবুলালের। যদিও শুরুটা এমন ছিল না। স্থানীয় সূত্রে খবর, বাবুলালের সঙ্গে পিকুনের সম্পর্ক প্রায় ১৫ বছরের। দু’জনেই এলাকায় ইমারতি দ্রব্যের ব্যসায়ে যুক্ত ছিলেন। দু’জনের মধ্যে ছিল পারিবারিক সম্পর্ক। প্রয়াত পিকুনের বোন বছর ছয়েক আগে পর্যন্ত প্রতি ভাইফোঁটায় বাবুলালকে ফোঁটাও দিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, সম্পর্কে চিড় ধরে বাবুলাল পিকুনের কাছ থেকে চার লাখ টাকা ধার নেওয়ার পর। বাবুলাল বলেছিলেন, সিন্ডিকেটের বড় অফিস হবে। এটা ব্যবসায়িক বিনিয়োগ। পরে ব্যবসার পরিধি বাড়লে বাবুলাল সেই টাকা পিকুনকে ফেরত দেবেন।

পিকুনের মা রেখা দত্ত আয়ার কাজ করেন। তিনিই ধার করে সেই টাকা যোগাড় করেন। বিপত্তি বাধে ২০১৮ সালের পর সেই টাকা ফেরত চাওয়ায়। দু’জনের ব্যবসায়িক বিচ্ছেদ ঘটে। এলাকার আরও এক প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী বিপ্লব (মহারাজ) মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে পিকুনের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। ও দিকে বাবুলালের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে বিজেপি-র।

Advertisement

এর পর নানা রকম পুলিশি মামলায় জড়িয়ে বাবুলাল এলাকা ছাড়া হন। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে এলাকা ছাড়া বাবুলাল আবার এলাকায় ফিরেও আসেন। নিয়মিত জিম করা চেহারার বাবুলাল এলাকায় ‘মাসলম্যান’ হিসাবেই পরিচিত। অভিযোগ, তিনি ভোটের আগে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াতে শুরু করেন। বাবুলাল এলাকায় ফিরে আসায় মহারাজ গোষ্ঠী অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়ে। এরই মধ্যে মহারাজ জানতে পারেন, একদা বাবুলাল ঘনিষ্ঠ এবং এই মুহূর্তে তাঁর সঙ্গে কাজ করা পিকুন, বাবুলালের কাছে ৪ লাখ টাকা পান। তিনি পিকুনকে বলেন, টাকা ফেরত চাইতে। প্রয়োজনে পিকুনকে সাহায্যের আশ্বাসও দেন। পিকুনের স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। তাঁর টাকারও দরকার। তাই মহারাজের এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান পিকুন।

কিন্তু এর পরেও কিছুতেই টাকা ফেরত দিতে চাইছিলেন না বাবুলাল। তারই জেরে বুধবার দুপুরে বাবুলালকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেন পিকুন। এর পর থেকেই তাঁর গতিবিধির দিকে নজর রাখছিল বাবুলাল গোষ্ঠী। রাতে নৈশ কার্ফু, ফাঁকা এলাকা। স্থানীয় পার্টি অফিস থেকে পিকুন বেরোতেই তাঁকে ধাওয়া করে দু’টি বাইক। তার মধ্যে দ্বিতীয় বাইকের চালকের আসনের পিছনে বসা আততায়ী কাছ থেকে গুলি করে। পাঁচটি গুলি লাগে পিকুনের শরীরে। একটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এর থেকেই প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান আততায়ীরা পেশাদার খুনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন