আহত: হাসপাতালে আজানুর। নিজস্ব চিত্র
একশো দিনের কাজ প্রকল্পে মাটি কাটার সময়ে বোমা ফেটে জখম হলেন এক ব্যক্তি। শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে গোপালনগর থানার জানিপুর এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, জখম ব্যক্তির নাম আজানুর মণ্ডল। বাড়ি স্থানীয় সাতবেড়িয়া এলাকায়। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনায় গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জানিপুর গ্রামে একটি জমিতে এ দিন সকাল থেকে কয়েকজন শ্রমিক মাটি কাটছিলেন। পুকুর খননের কাজ চলছিল। দুপুর ১টা নাগাদ আজানুর কোদাল দিয়ে মাটিতে কোপ দিতেই প্রচণ্ড শব্দ হয়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ছিটকে পড়েন। তাঁর হাত-পা-বুক-মুখ ঝলসে যায়। আশেপাশের লোকজন আজানুরকে উদ্ধার করে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান।
বাসিন্দারা জানান, বেশ কিছু দিন পরে তাঁরা গ্রামে বোমার শব্দ শুনলেন। সঙ্গে সঙ্গে পুরনো আতঙ্কের দিন মনে পড়ল তাঁদের। অতীতে এলাকায় দুষ্কৃতীর দৌরাত্ম্য ছিল। গুলি-বোমাবাজি ছিল নিয়মিত ঘটনা। গাজি পরিবারের সদস্য মুকুল গাজিকে বাম আমলে দুষ্কৃতীরা বাড়িতে ঢুকে খুন করেছিল। তিনি এলাকায় তৃণমূলকে নেতৃত্ব দিতেন। ওই গ্রামের বাসিন্দা এক সিপিএম কর্মীকেও দুষ্কৃতীরা খুন করেছিল। ঘটনার পরে পুলিশ গ্রামে তল্লাশি শুরু করে দিয়েছে। তবে আর কোনও বোমা মেলেনি। বনগাঁর এসডিপিও অশেষবিক্রম দস্তিদার বলেন, ‘‘কারা কী উদ্দেশ্যে বোমা পুঁতে রেখেছিল, তা জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।’’ গাজি পরিবারের সদস্য সৈফুদ্দিন গাজি বলেন, ‘‘কারা বোমা রেখে গিয়েছে জানি না। তবে দাদা মুকুল গাজি খুন হওয়ার সময় থেকেই গ্রামে বোমা রাখাটা শুরু হয়েছে।’’
বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটে সন্ত্রাস তৈরির উদ্দেশ্যেই তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ওই বোমা পুঁতে রেখেছিল। পুলিশের উচিত দুষ্কৃতীদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া।’’ তৃণমূলের বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি-আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনায় জড়িত।’’
বোমা ফাটার ঘটনার পরে শ্রমিকেরা দাবি তুলেছেন, নিরাপত্তা না পেলে তাঁরা কাজ করবেন না। জখম শ্রমিককে সরকারি ভাবে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক— এই দাবিও তুলেছেন তাঁরা। বনগাঁর মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। জখম ওই শ্রমিককে সরকারি ভাবে আর্থিক সাহায্য করা যাবে বলেই মনে করি।’’