ঠেসেঠুসে দশজনও অটোতে

অটো চালানোর জন্য পরিবহণ দফতর থেকে চালকেরা যে পারমিট পান, সেখানে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া থাকে, অটোতে চারজনের বেশি যাত্রী তোলা যাবে না। চালকের ডান দিকে কোনও যাত্রীকে বসানো যাবে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৭ ০১:২১
Share:

ঝুঁকি: বনগাঁ মহকুমার নানা প্রান্তে এ ভাবেই বেশি লোক নিয়ে চলে অটো। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

অটো চালানোর জন্য পরিবহণ দফতর থেকে চালকেরা যে পারমিট পান, সেখানে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া থাকে, অটোতে চারজনের বেশি যাত্রী তোলা যাবে না। চালকের ডান দিকে কোনও যাত্রীকে বসানো যাবে না।

Advertisement

কিন্তু বাস্তবে ওই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বিপজ্জনক ভাবে চলছে অটো। চালকদের দাপটে অতিষ্ঠ যাত্রীরাও। বনগাঁ, বাগদা, গাইঘাটা, গোপালনগর সর্বত্র অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ছুটছে অটো। চারজন তো দূরের কথা, কোনও কোনও অটোতে দশজনও তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। চালকের ডান দিকেও যাত্রী তোলা হয়।

অটোর গায়ে রীতিমতো ঝুলে থাকেন অনেকে। চালকদেরই ঠিকমতো বসার জায়গা থাকে না। কোনওমতে স্টিয়ারিং ধরে থাকেন তাঁরা। ওই অবস্থাতেই কিছু চালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালান। চলছে রেষারেষিও। ফলে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বা জখমের ঘটনাও ঘটছে প্রায়ই।

Advertisement

দিন কয়েক আগে বনগাঁর চাঁদা এলাকায় অটো থেকে এক যাত্রী নিজেকে সামলাতে না পেরে পড়ে গিয়ে গুরুতর চোট পান। হেলেঞ্চা-দত্তফুলিয়া সড়কে অটোর ধাক্কায় এক কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ, তারপরেও ওই সড়কে অটোতে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা বা রেষারেষি বন্ধ হয়নি।

যাত্রীদের অভিযোগ, বেশি যাত্রী তোলা হচ্ছে কেন প্রশ্ন করলে অটো চালকেরা খারাপ ব্যবহার করেন। বলেন, ‘‘উঠতে হলে উঠুন, না হলে নেমে যান।’’ যাত্রীরা জানান, এমনও দেখা যায়, স্ট্যান্ড থেকে চারজন যাত্রী নিয়ে অটো ছাড়া হলেও পথে ফের যাত্রী তোলা হয়।

কয়েকজন চালকের কথায়, ‘‘চারজন যাত্রী নিয়ে গেলে তেলের দাম ওঠে না। বাধ্য হয়েই বেশি যাত্রী নিতে হচ্ছে।’’

সম্প্রতি বনগাঁর এসডিপিও অটোতে বেশি যাত্রী তোলা আটকাতে অভিযান শুরু করেন। বেশ কিছু অটো চালকের বিরুদ্ধে মামলা রুজুও করা হয়। বেশি যাত্রী থাকায় যাত্রীদের অটো থেকে নামিয়ে অন্য যানবাহনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে পুলিশ। কিন্তু তারপরেও পরিস্থিতি খুব বেশি পাল্টায়নি বলে যাত্রীদের অভিজ্ঞতা।

বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের কাছ থেকে আকাইপুর, মামুনপুর, নাটাবেড়িয়ার মতো আটটি রুটে অটো চলে। ওই অটো ইউনিয়নের সম্পাদক প্রসেনজিৎ ঘোষের দাবি, ‘‘আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে বৈঠক করে চালকদের বলে দিয়েছি, চারজনের বেশি যাত্রী তোলা যাবে না। ডান দিকে যাত্রী বসানো যাবে না। ডান দিকটা রড দিয়ে আটকে দিতে হবে।’’ চালকেরা এই নির্দেশ পালন করছেন বলেই তাঁর দাবি। যাত্রীদের বাস্তব অভিজ্ঞতা অবশ্য হামেশাই এই দাবির সঙ্গে মেলে না।

উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিবহণ অধিকর্তা সিদ্ধার্থ রায় বলেন, ‘‘অতিরিক্ত যাত্রী তোলার বিষয়ে দফতরের পক্ষ থেকে অভিযান চলছে। তল্লাশি আরও বাড়ানো হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন