coronavirus

মানুষ বিভ্রান্ত, বলছেন জনপ্রতিনিধিরাই

এলাকায় পূর্ণাঙ্গ কোভিড হাসপাতালের দাবি ছিল প্রথম থেকেই। কোভিড হাসপাতাল না থাকায় রোগীদের হয়রানি বেড়েছে।

Advertisement

সুপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২০ ০৬:৩৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

আক্রান্তের তালিকায় জেলায় সব থেকে উপরে নাম রয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। রাজ্য সরকারের লকডাউন ছাড়াও প্রায় প্রতিটি পুরসভাই স্থানীয় ভাবে লকডাউন জারি করেছে এলাকায়। তবুও সংক্রমিতের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আসছে না ব্যারাকপুর মহকুমায়। আক্রান্তের তালিকায় সব থেকে উপরে রয়েছে দমদম এলাকা।

Advertisement

কিন্তু গত দু’সপ্তাহ ধরে কাঁচরাপাড়া, নৈহাটি, হালিশহর, শ্যামনগর, ভাটপাড়া, কাঁকিনাড়া এলাকায় সংক্রমিতের সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। কিন্তু এলাকায় করোনা-আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য কোনও হাসপাতাল ছিল না। একটি বেসরকারি হাসপাতালকে কোভিড হাসপতাল হিসেবে ব্যবহার করা হলেও সেখানে কোভিড পজ়িটিভ রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। করোনার উপসর্গ আছে এমন রোগীদের এই হাসপাতালে রাখা হয়। রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে তাঁদের বারাসতের কোভিড হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এলাকায় পূর্ণাঙ্গ কোভিড হাসপাতালের দাবি ছিল প্রথম থেকেই। কোভিড হাসপাতাল না থাকায় রোগীদের হয়রানি বেড়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কলকাতার হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা করাতে হয়েছে তাঁদের। কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে সম্প্রতি মৃত্যু হয়েছে এক স্কুল পড়ুয়ার। কোনও কোভিড হাসপাতাল না থাকায় বিস্মিত ছিলেন চিকিৎসকেরাও। এই মহকুমাতেই আক্রান্তের হার সব থেকে বেশি। কিন্তু এখানে কোভিড হাসপাতাল না থাকায় রোগীদের সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকেরাও ক্ষুব্ধ ছিলেন। ক্ষোভ জমছিল শাসক দলের জনপ্রতিনিধিদের মধ্যেও।

Advertisement

সম্প্রতি জেলাশাসকের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে নিজেদের ক্ষোভের কথা ব্যক্ত করেছিলেন দমদমের সাংসদ সৌগত রায়। নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক হাসাপাতালের অভাবের কথা তুলেছিলেন। শুধু হাসপাতালের কথাই নয়, সৌগত সমন্বয়ের অভাবের কথাও তুলেছিলেন। একজন ব্যক্তির জ্বর হলে, তিনি কী করবেন, কোথায় যাবেন, তার কোনও ধারণাই জনপ্রতিনিধিদের নেই। কোথায় অ্যাম্বুল্যান্স মিলবে, কোথায় লালারস পরীক্ষা করা যাবে, সেফ হোম কোথায় আছে, সেখানে শয্যা খালি আছে কিনা তা কী ভাবে জানা যাবে সেই বিষয়েও সাধারণ মানুষের কোনও ধারণা নেই। সে জন্য নৈহাটি, কাঁচরাপাড়া, হালিশহর, ভাটপাড়ার বাসিন্দারা নদিয়ার কল্যাণীতে যাচ্ছেন চিকিৎসার জন্য।

সম্প্রতি নৈহাটির এক ব্যক্তির বাবা এবং মা তিন দিনের ব্যবধানে করোনা আক্রান্ত হন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করার কয়েক দিন পরে যুবকের নিজেরও উপসর্গ দেখা দেয়। বাড়িতে তিনি একা ছিলেন। ফোন করে কোথাও অ্যাম্বুল্যান্স পাননি। এ ভাবে দু’দিন কাটার পরে তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। কোথায় ফোন করলে সুরাহা হবে বুঝতে পারছিলেন না।

শেষ পর্যন্ত নিজের অসহায়তার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন। তা দেখে তাঁর কয়েকজন বন্ধু পুরসভার মাধ্যমে অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করে তাঁকে ব্যারাকপুরের কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যান। রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার পরে তাঁকে পাঠানো হয় বারাসতের কোভিড হাসপাতালে।

সম্প্রতি হাসাপাতালের দাবি তীব্র হওয়ার পরে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তরফ থেকে নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতাল এবং খড়দহের বলরাম হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। নৈহাটির হাসপাতালটিতে ১৩৮টি শয্যা রয়েছে। বলরাম হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ১০৪টি। এই পর্যন্তই জানা গিয়েছে। সেখানে আর কী কী সুবিধা মিলবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি ভেন্টিলেটর এবং অন্যান্য সুবিধা যেন পাওয়া যায় এই দুই হাসপাতালে।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন