Joynagar Murder

১১ হাজার টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করে পালাচ্ছিলেন, জয়নগরকাণ্ডে সেই আনিসুর নদিয়া থেকে গ্রেফতার

বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি জানিয়েছেন, ধৃত দু’জনেই খুনের পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কামালউদ্দিন সুপারভাইজারের কাজ করতেন। সন্দেশখালি থেকে তাঁরা গাড়ি ভাড়া করেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

জয়নগর শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:৫৪
Share:

(বাঁ দিকে) আনিসুর লস্কর। (ডান দিকে) তাঁকে গ্রেফতারের পর সাংবাদিক বৈঠকে পুলিশ। — ফাইল চিত্র।

জয়নগরে তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্কর খুনের ঘটনায় আরও দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ‘মাস্টারমাইন্ড’ আনিসুর লস্কর। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অন্য জনের নাম কামালউদ্দিন ঢালি। বৃহস্পতিবার গাড়ি ভাড়া করে নদিয়ায় পালাচ্ছিলেন তাঁরা। মোবাইল ফোনে আড়ি পেতে তাঁদের ধরেছে পুলিশ। দু’জনেই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তবে খুনের ‘মোটিভ’ এখনও স্পষ্ট নয় বলেই জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

সোমবার খুন হন জয়নগরের বামনগাছি পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন। ওই ঘটনায় দলুয়াখাকির বাসিন্দা আনিসুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে পরিবারের লোকজন। ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন আনিসুর। বৃহস্পতিবার নদিয়া থেকে তাঁকে ধরা হয়। বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি জানিয়েছেন, ধৃত দু’জনেই খুনের পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কামালউদ্দিন সুপারভাইজারের কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার সন্দেশখালি থেকে তাঁরা গাড়ি ভাড়া করেন। ১১ হাজার টাকা দিয়ে। তার পর সেই গাড়িতে চেপে রওনা হন নদিয়ার উদ্দেশে। রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপারকে জানানো হয় বিষয়টি। রানাঘাট পুলিশের সহায়তায় নদিয়ার মোহনপুর ফাঁড়িতে তাঁদের আটক করা হয়।

সোমবার তৃণমূল নেতা খুনের পর বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার পার্থ ঘোষের নেতৃত্বে বিশেষ দল গঠন করা হয়। তাতে ছিলেন ১১ জন। সেই দল তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, ঘটনার দিন দু’টি বাইকে চেপে পাঁচ জন এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে এক জন সাহাবুদ্দিন গণধোলাইয়ে মৃত। আর এক জন শাহরুল শেখকে আগেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ বার আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হল।

Advertisement

ধৃত শাহরুল যে ‘বড় ভাই’-এর কথা বলেছিলেন, সেই বিষয়েও বিশদে কিছু জানাতে চায়নি পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, জয়নগরকাণ্ডে ধৃত শাহরুল শেখ যে নাসির ওরফে ‘বড় ভাই’-এর কথা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, তাঁর নাম আলাউদ্দিন সাঁপুই। তিনি মন্দিরবাজার থানা এলাকার টেকপাঁজা গ্রামের বাসিন্দা। এলাকায় আলাউদ্দিন সিপিএম নেতা হিসাবে পরিচিত।

সইফুদ্দিন-খুনের পিছনে যে ভাড়াটে খুনি রয়েছে, তা আগেই আন্দাজ করেছিলেন তদন্তকারীদের একাংশ। পুলিশ মনে করছে, খুনের আগে রীতিমতো পুরো এলাকা সরেজমিনে খতিয়ে দেখা হয়। সবটাই পরিকল্পনামাফিক। আততায়ীদের গুলি করার দিনক্ষণ এবং অপারেশনের ধরন দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, খুনের নেপথ্যে কোনও ‘পাকা মাথা’ রয়েছে। তবে এই ‘পাকা মাথা’ যে নাসিরই, তা খোলসা করেনি পুলিশ। সূত্রের খবর, এর আগে তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছিলেন জয়নগরকাণ্ডের ‘পাকা মাথা’ আদতে নাসির হালদার নামে টেকপাঁজা গ্রামের এক বাসিন্দা। ধৃত শাহরুলের বয়ানে উঠে এসেছিল নাসিরের নাম। শাহরুলের দাবি, সইফুদ্দিনকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন এই নাসিরই। গুলি চালিয়েছিলেন সাহাবুদ্দিন। অভিযোগ, তৃণমূল নেতা খুনের পর সাহাবুদ্দিনকে পিটিয়ে মারা হয়।

মঙ্গলবার পর্যন্ত নাসিরের সম্পর্কে বিশেষ তথ্য ছিল না পুলিশের কাছে। কিন্তু পুলিশ সূত্রে বুধবার জানা গিয়েছিল, শাহরুল জেরায় জানিয়েছেন, কলকাতায় পুরনো জিনিসপত্র কেনাবেচার কাজ করতেন এই নাসির। যদিও এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে নাসিরের পরিবার। তাঁর পরিবারের দাবি, নাসিরকে ইচ্ছা করে ফাঁসানোর জন্যই তাঁর নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে সইফুদ্দিন খুনের পর থেকে নাসিরেরও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তার মধ্যেই গ্রেফতার আরও দু’জন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন