খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের সালিশি সভায় ডেকে মারধর করে তুলে দেওয়া হল পুলিশের হাতে।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে সন্দেশখালির ৩ নম্বর মণিপুর গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রামের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার রাতে মারধরে গুরুতর জখম হন ওই গ্রামেরই সুরঞ্জন বর (২৪)। বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। সেই খবর গ্রামে পৌঁছনোর পরে উত্তেজনা ছড়ায়। দু’পক্ষের বচসা, হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পুলিশ গিয়ে এক মহিলা-সহ পাঁচজনকে আটক করে।
অভিযোগ, সোমবার রাতে মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন সুরঞ্জন। গ্রামের কয়েক জনের সঙ্গে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। যার জেরে গাছে বেঁধে পেটানো হয় তাঁকে। পরে সুরঞ্জনকে ভর্তি করা হয় চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামের মাতব্বরেরা সালিশি সভা বসান। সেখানে সুরঞ্জনকে মারধরে জড়িত পাঁচ অভিযুক্তও আসে।
ইতিমধ্যে, সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ সালিশি যখন সবে শুরু হয় হয়, সুরঞ্জনের মৃত্যুর খবর পৌঁছয় গ্রামে। উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ পৌঁছয়। একপক্ষ অভিযুক্তদের পুলিশের হাতে তুলে দিতে অস্বীকার করে। পরে সন্দেশখালি থানার ওসি বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। সুরঞ্জনকে পেটানোর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক মহিলা-সহ ৫ জনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
গ্রামের কিছু লোক ওই পাঁচজনকে গ্রেফতারের দাবি জানালেও অন্য পক্ষের বক্তব্য, যাঁদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হল, তাঁরা কেউ খুনের ঘটনায় জড়িত নন। গ্রামবাসীরা দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়ে একপ্রস্থ মারপিট বাধান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে পুলিশ ওই পাঁচজনকে নিয়ে এলাকা ছাড়ে। উত্তেজনা থাকায় গ্রামে পুলিশি পিকেট বসেছে।
নিহতের স্ত্রী মাম্পি বলেন, ‘‘জমিজমা-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ওঁর উপরে পুরনো রাগ ছিল কারও কারও। মদ খাওয়ার অজুহাত তুলে আমার স্বামীকে পিটিয়ে মারা হল।’’ সুরঞ্জনের বাবা নিমাইবাবুর কথায়, ‘‘ছেলে যদি সত্যিই অন্যায় করে থাকত, তা হলে ওকে পুলিশে দেওয়া যেত। গাছে বেঁধে পেটান হল কেন?’’
পুলিশের দাবি, ঘটনাটি নিয়ে সবে তদন্ত শুরু হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে থানায় আনা হয়েছে। এর বেশি কিছু বলা আপাতত সম্ভব নয়।