কী করছ, চোখ-কান খুলে রেখো

ধরপাকড়ের পাশাপাশি সচেতনতার বার্তা পুলিশের

বনগাঁ, অশোকনগর, হাবরা থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে ফেসবুক ও হোয়াটস অ্যাপে উস্কানিমূলক পোস্ট দেওয়ার জন্য। ধৃতেরা পুলিশকে জানিয়েছে, অসাবধানতায় তারা এমন কাজ করে ফেলেছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

বনগাঁ ও বারাসত শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৭ ১৪:০০
Share:

বার্তা: হাবরার একটি স্কুলে। নিজস্ব চিত্র

ধর্ম নিয়ে কাউকে আঘাত করবে না। কোনও জাতির বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ায় এমন মন্তব্য করবে না, কারও সংস্কৃতি নিয়ে কটূক্তি করবে না। এ সব নিয়ে ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপে কোনও ছবি, কার্টুন, তথ্য এলে তা নিয়ে মন্তব্য এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। কেউ লাগাতার এমন ধরনের প্রচার সোশ্যাল মিডিয়ায় চালিয়ে যাচ্ছে দেখলে, তাকে ‘আনফ্রেন্ড’ করা দরকার— উত্তর ২৪ পরগনা পুলিশের পক্ষ থেকে এমন বার্তা নিয়ে প্রচার চালানো শুরু হয়েছে জেলার বিভিন্ন স্কুলে। তরুণ প্রজন্মই সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইট বেশি ব্যবহার করে। বসিরহাট-কাণ্ডে যে ছেলেটি ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ পোস্টটি করেছিল, সে-ও একাদশ শ্রেণির ছাত্র। এ সব নজরে রেখেই তরুণ প্রজন্মকে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ব্যবহারে আরও দায়িত্বশীল করে তুলতে এই কর্মসূচি বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

Advertisement

বসিরহাট-কাণ্ডের পরে সোশ্যাল মিডিয়ার উপরে নজরদারি বাড়িয়েছে জেলা পুলিশ-প্রশাসন। গোলমালের পরবর্তী কয়েকটা দিন নেট পরিষেবাও বন্ধ রাখা হয় (ইতিমধ্যে অবশ্য স্বাভাবিক হয়েছে পরিষেবা)। বনগাঁ, অশোকনগর, হাবরা থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে ফেসবুক ও হোয়াটস অ্যাপে উস্কানিমূলক পোস্ট দেওয়ার জন্য। ধৃতেরা পুলিশকে জানিয়েছে, অসাবধানতায় তারা এমন কাজ করে ফেলেছে। কেউ জানিয়েছে, অন্যের পোস্ট শেয়ার করেছে মাত্র।

মঙ্গলবার হাবরা থানার পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকার কুড়িটি স্কুলে গিয়ে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের মধ্যে সচেতনতার প্রচার চালানো হয়।

Advertisement

হাবরা থানার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কী ধরনের পোস্ট করা উচিত নয়, তা বোঝানো হয়েছে। করলে কী ধরনের শাস্তি হতে পারে, তা-ও বলা হয়েছে। বোঝানোর কাজ আরও কয়েক দিন চলবে।’’

মছলন্দপুর, গোবরডাঙা পুলিশ ফাঁড়ির পক্ষ থেকেও এ দিন একই কর্মসূচি নেওয়া হয়। একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা জয়শ্রী মুস্তাফি বলেন, ‘‘পুলিশের এই পদক্ষেপের ফলে ছাত্রীরা সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে সচেতন হতে পারল। ছাত্রীরা অনেক সময় অপরিণত বয়সের জন্যই নানা রকম পোস্ট করে ফেলে।’’ একাদশ শ্রেণির ছাত্রী জয়তী দত্ত বলে, ‘‘এখন থেকে ফেসবুক করার সময়ে সচেতন থাকব। এলাকার মানুষকেও বোঝাব।’’ রাজবল্লভপুর হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র সত্যজিৎ রায়ের কথায়, ‘‘বসিরহাটের ঘটনার পরে স্কুলের শিক্ষকেরা আমাদের সচেতন করে দিয়েছিলেন। এখন পুলিশের পক্ষ থেকেও বোঝানো হল। আমরা নিশ্চয়ই বিষয়গুলি মনে রাখব।’’

বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার সাঁটিয়েও সচেতনতার প্রচার চলছে। শাসন, দেগঙ্গা, দত্তপুকুর, আমডাঙা-সহ কয়েকটি থানার পুলিশের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার এই কর্মসূচি নেওয়া হয়। জগদ্দলের পুলিশ আবার এলাকায় সাইবার দুনিয়ায় নজরদারি চালানোর জন্য ‘সাইবার আরজি পার্টি’ তৈরি করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন