অ্যাকশন: বেপরোয়া অসীম। ছবি ফেসবুকের সৌজন্যে
কখনও চিত্র পরিচালক, কখনও সহ পরিচালক, কখনও সিনেমাটোগ্রাফার— ফেসবুকে নানা কায়দার ছবি দিয়ে নিজের এমন নানা পরিচয় দিত অসীম সরকার।
গরিব ঘরের ছেলেটির এ হেন উচ্চাকাঙ্খাই তাকে অপরাধের পথে টেনে নিয়ে গেল, মনে করছেন তদন্তকারীরা।
অসীমকে জেরা করা ছাড়াও তার ফেসবুক পেজ ঘেঁটে দেখছেন গোয়েন্দারা। সেখান থেকেই উঠে আসছে বছর চব্বিশের যুবক সম্পর্কে আরও নানা তথ্য।
ফেসবুকে বাংলা সিনেমার কয়েকজন অভিনেতার সঙ্গে তার ছবি পোস্ট করেও নিজেকে টলিউডের লোক বলে প্রমাণ করার চেষ্টা চালিয়েছিল অসীম।
জোড়া পিস্তল হাতে ছবিও আছে তার। পিস্তল নকল হলেও এমন ছবি দেওয়ার পিছনে অপরাধমূলক মানসিকতাই কাজ করে বলে মনে করছেন পুলিশের এক প্রবীণ অফিসার। ভুল ইংরেজিতে অসীম নিজের সম্পর্কে ফেসবুক প্রোফাইলে লিখেছে, ‘‘সিম্পল অ্যান্ড ফ্রেন্ডলি। বাট ডোন্ট অ্যাংরি মি। ইউ মাস্ট ফিনিশ।’’ ‘সহজ’ ও ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ চরিত্র হলেও তাকে ঘাঁটালে ফল ভাল হবে না বলে স্পষ্টই হুমকি দেওয়া হয়েছে।
অসীম অতীতে কোনও অপরাধে জড়িয়েছিল বলে তথ্য নেই পুলিশের কাছে। কিন্তু যে যুবক ফেসবুকে এমন ছবি দিতে পারে, লিখতে পারে, তার অপরাধে জডিয়ে পড়ার প্রবণতা আছে বলেই মনে করছেন এক তদন্তকারী অফিসার। নদিয়ার হরিণঘাটার দিঘল গ্রামের বাসিন্দা হলেও ফেসবুকে অসীম লিখেছিল, হাবরায় থাকে সে। গ্রামের বাড়ির কথা মুখেও আনত না। অকারণ এমন মিথ্যা বলার প্রবণতাও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।
পুলিশ জানতে পেরেছে, কলকাতার হরিদেবপুরের বাসিন্দা বিএসএনএল কর্তা অসীমকান্তি পালের যে ক্যামেরাটি হাতিয়ে নেওয়ার জন্য তাঁকে খুনের ছক কষেছিল অসীম, সেই ক্যামেরাটি সম্পর্কে ইন্টারনেটে খোঁজ নিয়েছিল ওই যুবক। ফেসবুকের মেসেঞ্জারে একজনের মতামতও নেয় ক্যামেরাটি নিয়ে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তদন্তে আমরা অসীমের ফেসবুক প্রোফাইল ভাল ভাবে বিশ্লেষণ করে দেখছি।’’ সোমবার অভিজিৎবাবু গাইঘাটা থানায় এসে অসীমকে জেরা করেছেন।