পথের ঘর থেকে নিজের ঘরে ফেরাল পুলিশ

returned homeথানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার তমালকান্তি দাস জানান, ওই ব্যক্তি মানসিক ভাবে অসুস্থ থাকায় বাড়ির ঠিকানা বলতে পারছিলেন না। থানায় আনার পরে পুলিশ ধীরে ধীরে তাঁর সঙ্গে আলাপ জমায়।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৭ ০৬:৩০
Share:

ফেরা: মধ্যমগ্রাম থানায় ছেলের সঙ্গে নির্মল গড়াই। —নিজস্ব চিত্র।

হাসপাতাল থেকেই হারিয়ে গিয়েছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন মধ্য চল্লিশের মানুষটি। তার পরে কখনও ট্রেনে চেপে, কখনও পায়ে হেঁটে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। শেষমেশ সাড়ে তিন বছর পরে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশের সহায়তায় পরিবারের কাছে ফিরলেন তিনি। মঙ্গলবার তাঁর আসানসোলের বাড়িতে খুশির হাওয়া, মিষ্টিমুখ করছেন প্রতিবেশীরাও।

Advertisement

ঘটনাটি সোমবার বিকেলের। মধ্যমগ্রাম থানায় ফোন আসে, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে উদ্দেশ্যহীন ভাবে হেঁটে চলেছেন মধ্য চল্লিশের এক ব্যক্তি। জিজ্ঞাসা করলেও ঠিকানা বলতে পারছেন না। এমনিতেই অত্যন্ত ব্যস্ত জাতীয় সড়কে সব সময়েই দ্রুত গতিতে যান চলাচল করে। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ওই ব্যক্তিকে উদয়রাজপুরের ৯ নম্বর গেট থেকে নিয়ে আসে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ। প্রাথমিক চিকিৎসাও করানো হয়।

থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার তমালকান্তি দাস জানান, ওই ব্যক্তি মানসিক ভাবে অসুস্থ থাকায় বাড়ির ঠিকানা বলতে পারছিলেন না। থানায় আনার পরে পুলিশ ধীরে ধীরে তাঁর সঙ্গে আলাপ জমায়। কথায় কথায় তদন্তকারীরা জানতে পারেন, আসানসোলে তাঁর বাড়ি। সেখানকার বিভিন্ন থানায় ফোন করে পুলিশ। কোনও থানা জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে ওই বয়সী কেউ নিখোঁজ হননি। কোথাও আবার খোঁজ করে জানা যায়, তাঁদের পরিবারের যিনি নিখোঁজ হয়েছেন তিনি এই ব্যক্তি নন।

Advertisement

অনেক খোঁজ-খবরের পরে আসানসোল দক্ষিণ থানা জানায়, ২০১৪-র ১৪ মার্চ ওই থানা এলাকার জামুড়িয়া হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন নির্মল গড়াই নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি। তাঁর বাড়ি আসানসোলের তিনচুরিয়া গ্রামে। সেই মতো নির্মলবাবুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ। কথা হয় ওই ব্যক্তির ছেলে বাবি গড়াইয়ের সঙ্গেও। চেহারার বিবরণ মিলে যায়। মোবাইলে ছবি চালাচালিও হয়। এর পরেই মধ্যমগ্রামে ছুটে আসে তাঁর পরিবার। নিশ্চিত হওয়ার পরে ওই ব্যক্তিকে পরিবারের হাতে তুলে দেয় পুলিশ।

মঙ্গলবার বিকেলে আসানসোলে নির্মলবাবুর বাড়িতে ভিড় করেছিলেন আত্মীয় প্রতিবেশীরা। সজল চোখে তাঁদের মিষ্টিমুখ করান স্ত্রী বুলুদেবী। তিনি জানান, সব কিছুই ঠিক ছিল। চাষবাস করতেন নির্মলবাবু। হঠাৎই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে এক দিন মাঠে অসুস্থ হয়ে পড়েন। আসানসোল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে এক দিন বেপাত্তা হয়ে যান নির্মলবাবু। ছেলে বাবি বলেন, ‘‘এ ক’বছর বাবাকে কত খুঁজেছি! হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। আজ পুলিশের জন্যই বাবাকে পেলাম।’’ উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, ‘‘কাজের বাইরেও অনেক কিছুতে পুলিশকে উদ্যোগী হতে হয়। এটা তেমনই একটা উদ্যোগ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement