টাকা হাতাতেই খুন যুবককে, অনুমান পুলিশের
Murder

ফেসবুক পোস্ট দেখে মিলল পরিচয়

শনিবার বনগাঁর গোবরপুর এলাকায় একটি বাড়ির বন্ধ ঘরের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় এক যুবকের পচাগলা দেহ। দেহটি প্লাস্টিকে জড়ান অবস্থায় একটি বক্সখাটের মধ্যে ঢোকানো ছিল৷ পা দড়ি দিয়ে বাঁধা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২১ ০৭:৪১
Share:

প্রতীকী ছবি।

পরিবারের পক্ষ থেকে ফেসবুকে ছবি দিয়ে পোস্ট করে লেখা হয়েছিল, ‘এই ছেলেটি বনগাঁ থেকে হারিয়ে গিয়েছে। কেউ সন্ধান পেলে জানাবেন।’ পর পর দু’টি পোস্ট করা হয়েছিল গত বছর সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসে। ওই পোস্টের সূত্র ধরেই পুলিশ জানতে পারল, খুন করা হয়েছে সুদীপ মজুমদার (২৪) নামে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা যুবককে। গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর বন্ধু অভিজিৎ সন্ন্যাসীকে। অভিযুক্ত আর একজনকে খুঁজছে পুলিশ।

Advertisement

শনিবার বনগাঁর গোবরপুর এলাকায় একটি বাড়ির বন্ধ ঘরের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় এক যুবকের পচাগলা দেহ। দেহটি প্লাস্টিকে জড়ান অবস্থায় একটি বক্সখাটের মধ্যে ঢোকানো ছিল৷ পা দড়ি দিয়ে বাঁধা। তদন্তকারীরা যুবকের পরিচয় জানতে পারেননি।

অভিজিৎ এক সময়ে ওই বাড়িতে ভাড়া থাকত। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও কোনও সূত্র মেলেনি। তদন্ত চলাকালীন বনগাঁ থানার আইসি সূর্যশঙ্কর মণ্ডলের কাছে একটি সূত্রে এক যুবকের বনগাঁ থেকে নিখোঁজ হওয়া-সংক্রান্ত ফেসবুক পোস্ট আসে। সেখানে দেওয়া ফোন নম্বরে যোগাযোগ করে পুলিশ। যুবকের পরিবারের সদস্যেরা বনগাঁয় আসেন। চটি, পোশাক এবং একটি ব্যাগ দেখে তাঁরা যুবককে শনাক্ত করেন। সুদীপ মহারাষ্ট্রে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতেন। পুলিশ জানিয়েছে, বনগাঁর গোবরাপুরে কৃষ্ণ দাসের বাড়িতে দু’টি ঘরে ভাড়া থাকত অভিজিৎ সন্ন্যাসী ও প্রণব বিশ্বাস নামে দুই যুবক। মাস ছ’য়েক আগে প্রণব ঘরে তালা দিয়ে চলে যায়। মাস দেড়েক আগে অভিজিৎও ঘর ছেড়ে দেয়। শনিবার বাসিন্দারা ঘর থেকে দুর্গন্ধ পান। পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ প্রণবের ঘরের তালা ভেঙে দেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, দেহের পচা গন্ধ যাতে ঘরের বাইরে না ছড়ায়, সে জন্য খুনিরা ঘরের জানলার ফাঁকফোকর সেলোটেপ দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছিল।

Advertisement

পুলিশ জানতে পারে, সুদীপ-প্রণব-অভিজিৎ সকলে পূর্ব পরিচিত। বাড়ি বাংলাদেশের মাদারিপুর এলাকায়। বিভিন্ন সময়ে তাঁরা এ দেশে চলে আসে। অভিজিৎ ও প্রণব গোবরাপুরে ভাড়া থাকত। সুদীপ কালিয়াগঞ্জে থাকত। অভিজিৎ গৃহশিক্ষকের কাজ করত।

তদন্তকারীরা জানান, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে সুদীপ এখানে জমি-বাড়ি কিনবেন বলে বনগাঁয় আসেন প্রণব-অভিজিতের কাছে। তাঁর কাছে কয়েক লক্ষ টাকা ছিল। দুই বন্ধুর ভাড়াবাড়িতে ওঠে সুদীপ। বনগাঁর পুলিশ সুপার তরুণ হালদার বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, সুদীপের কাছে যে টাকা ছিল, তার লোভেই খুন করা হয়েছে। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও একজনের খোঁজ চলছে।’’ ৬ এপ্রিল অভিজিৎকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলা হলে বিচারক ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন