সকাল থেকেই এলাকার চর্মরোগ চিকিৎসকের চেম্বারে রোগীদের থিকথিকে ভিড়। বেলা বেড়ে চলেছে। কিন্তু দেখা নেই ‘ডাক্তারবাবু’-র। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে অধৈর্য হয়ে পড়েছেন রোগীরা। অনেকেই ‘ডাক্তারবাবু’-র মোবাইলে ফোন করছেন। কিন্তু তা বন্ধ করা আছে।
এরই মধ্যে এসে দাঁড়াল একটি পুলিশের জিপ। রোগীদের কেউ কেউ পুলিশ দেখে ভাবলেন, হয়ত কোনও পুলিশকর্মী চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাই চিকিৎসকের কাছে এসেছেন। অপেক্ষারত কয়েক জন এগিয়ে পুলিশকর্মীদের জানালেন, ‘ডাক্তারবাবু এখনও এসে পৌঁছননি।’
কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যেই পুলিশের আগমন আর চিকিৎসকের অনুপস্থিতির বিষয়টি রোগীদের কাছে স্পষ্ট হল। চিকিৎসকের খোঁজ না পেয়ে চেম্বারে তালা ঝুলিয়ে দিল পুলিশ। রোগীদের জানিয়ে দিলেন, ‘ডাক্তারবাবু’ ভুয়ো বলে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশের মুখে এ কথা শুনে তখন হতবাক উপস্থিত রোগীরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বারুইপুর থানার মাদারহাটের বটতলায় গত ১০ বছর ধরে ওই ব্যক্তি চেম্বার খুলে চিকিৎসা করছেন। শুধু চর্মরোগ নয়। তিনি সব রোগের চিকিৎসাই করেন বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। এমন কী ডায়াবিটিসের চিকিৎসাও করেন বলে স্থানীয়দের দাবি। শুধু বারুইপুর নয়, রাজ্যর একাধিক জায়গায় তিনি চিকিৎসা করেন বলেও রোগীদের কাছে দাবি করেছেন ওই চিকিৎসক।
বুধবার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক কর্মী রোগী পরিচয়ে ওই চিকিৎসকের চেম্বারে গিয়েছিলেন। চিকিৎসক ওষুধ লেখার সময়ে তাঁর এমবিবিএস-এর শংসাপত্র ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখানোর জন্য বলেন ওই কর্মী। ওই কর্মীর দাবি, চিকিৎসক কোনও শংসাপত্র দেখাতে পারেননি। তার পরেই বারুইপুর থানায় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ওই কর্মী। ঘটনার তদন্তে নেমে ওই চিকিৎসকের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে বারুইপুর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের কথায়, কোনও ভাবে পুলিশের কাছে যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে তা ওই চিকিৎসকের কানে পৌঁছে গিয়েছে। সেই কারণেই তিনি আর চেম্বারমুখো হননি। আপাতত চেম্বারটি সিল করে দেওয়া হয়েছে।