ভাড়াটের উপরে নজর রাখতে উদ্যোগী পুলিশ

ভাড়াটেরাই ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের কাছে! ভাড়াটেরাই ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের কাছে! নানা অপরাধের ঘটনার তদন্তে নেমে জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের হাত আছে তাতে। যারা চুরি-ডাকাতির কয়েক মাস আগে থেকে ঘাঁটি গাড়ছে শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন অঞ্চলে।

Advertisement

বিতান ভট্টাচার্য

ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৭ ০০:৫৫
Share:

ভাড়াটেরাই ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের কাছে!

Advertisement

নানা অপরাধের ঘটনার তদন্তে নেমে জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের হাত আছে তাতে। যারা চুরি-ডাকাতির কয়েক মাস আগে থেকে ঘাঁটি গাড়ছে শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন অঞ্চলে। তারপরে অপারেশন চালিয়ে ফের গা ঢাকা দিচ্ছে সীমান্তের ওপারে। এদের সম্পর্কেই আগাম খোঁজ-খবর করতে তৎপর হয়েছে কমিশনারেট। সে জন্য বিশেষ পদক্ষেপ করছে তারা।

কী সেই পদক্ষেপ?

Advertisement

গোটা শিল্পাঞ্চলে ১৪টি থানা। প্রতিটি থানায় সাদা পোশাকের পুলিশের একটি বিশেষ বাহিনী তৈরি হয়েছে। প্রতিটি ভাড়া বাড়িতে ভাড়াটেদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ চলছে বাড়ি ঘুরে ঘুরে। উর্দি তো কেউ পরছেনই না, পুলিশের স্টিকার লাগানো গাড়িও ব্যবহার না করার কথা বলা হয়েছে। শুধুমাত্র পুলিশের পরিচয়পত্রটি সঙ্গে রাখছেন দলের সদস্যেরা।

হঠাৎ করে এলাকায় ঢুকে দুষ্কৃতীরা ভাড়া বাড়ি জুটিয়ে নিচ্ছে কী ভাবে?

একাধিক ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারছে, মূলত শহরের বাইরে বস্তি এলাকায় ঘাঁটি গাড়ছে দুষ্কৃতীরা। ছোট ছোট পায়রার খোপের মতো ঘরে দুই বা তিন মাসের ভাড়ার চুক্তিতে থাকার জায়গা মিলছে মাসিক ৮০০-১০০০ টাকায়। এলাকাতেও যাতে কেউ সন্দেহ না করে, সে জন্য ভাড়াটে সঙ্গিণীও জুটিয়ে নিচ্ছে এই সব দুষ্কৃতীরা।

তারা আবার আসছে কোথা থেকে?

বারের গায়িকা-নর্তকীরাই স্ত্রী সেজে সংসার পেতে বসছে কিছু দিনের জন্য। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল, লাগোয়া বারাসত, বনগাঁর পানশালাগুলিতে নিয়মিত ডিস্কো ও নাচ-গানের আসর বসে। সেখানে বাংলাদেশ থেকেও বহু মেয়ে এসে কাজ খুঁজছে। তাদেরই কাউকে টাকা দিয়ে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে কয়েক মাসের জন্য ঘরে তুলছে দুষ্কৃতীরা। এরপরে সুযোগ বুঝে ‘অপারেশন’ সেরে সংসার গুটিয়ে পগারপার হচ্ছে তারা। অনেক সময়ে সীমান্ত পেরিয়ে চলে যাচ্ছে বাংলাদেশেও। চুরি-ডাকাতির মালপত্রও ফেরত পেতে হন্যে হচ্ছে গোয়েন্দা-পুলিশ।

বেলঘরিয়ায় ডাকাতি, সোদপুরে রাজা রোডে গয়নার দোকানে ডাকাতি, পলতায় ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি বা ব্যারাকপুরের ডাকাতির মতো ঘটনায় তদন্তকারীরা আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পেরেছেন। জানা যাচ্ছে, দুষ্কৃতীদের সঙ্গে একজন স্থানীয় ‘টিপার’ থাকছে। সেই সমস্ত খবরাখবর দিচ্ছে। প্রয়োজনে স্থানীয় দুষ্কৃতীদের নিয়ে দল পাকাচ্ছে। বনগাঁ, গেদে বা বসিরহাট সীমান্ত পেরিয়ে দুষ্কৃতীরা আসছে। কমিশনারেটের এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘চোরাপথে তো বটেই ভিসা-পাসপোর্ট নিয়েও অনেকে এ দেশে ঢুকে ডাকাতি করে ফিরে যাচ্ছে।’’

ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুব্রত মিত্র বলেন, ‘‘টিটাগড়, বীজপুর, জগদ্দল, কামারহাটির বেশ কিছু জায়গা আমরা নজরদারির জন্য নির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করেছি। সেখানে ভাড়াটেদের সম্পর্কে বিশদ তথ্য নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এরপরে ধাপে ধাপে গোটা এলাকায় ভাড়াটেদের একটা নির্দিষ্ট তালিকা তৈরি করা হবে। তাতে অপরাধ দমনে অনেকটাই সুবিধা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন