কাটা তেলের ধোঁয়া ছড়াচ্ছে দূষণ

কারণ হিসেবে উঠে আসছে দু’টি দিক। প্রথমত, নতুন অটোর দাম প্রায় দু’লক্ষ টাকা। কিস্তিতে নিলেও প্রায় আশি হাজার টাকার কাছাকাছি প্রথমে জমা করতে হচ্ছে। এই টাকাটা খরচ করা সম্ভব হচ্ছে না অনেকের পক্ষে। এ ক্ষেত্রে সরকারি সহায়তাও তেমন মিলছে না বলে অভিযোগ।

Advertisement

সমীরণ দাস

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৩১
Share:

প্রাচীন: এখনও চলছে হলুদ-কালো অটো। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

পরিবেশ বাঁচাতে কাটা তেলের অটো নিষিদ্ধ হয়েছে। রাজ্য জুড়ে বাধ্যতামূলক হয়েছে গ্যাসের অটো। কিন্তু শহরতলির দিকে এখনও অনেক জায়গাতেই হলুদ-কালো রঙের পুরনো অটোই চলছে।

Advertisement

জয়নগর-কুলতলি অঞ্চলে রমরমিয়ে চলছে পুরনো অটো। জয়নগর-মজিলপুর পুর এলাকায় প্রায় ২০০টি অটো চলে। তার মধ্যে ৭০-৮০টি অটোই কাটা তেলে চলছে বলে স্থানীয় মানুষ জানান। একটু গ্রামাঞ্চলে ঢুকলেই হলুদ-কালো অটোর রমরমা আরও বেশি। কুলতলিতে কোথাও সবুজ-হলুদ অটোই নেই।

চালকেরা জানান, পুরনো অটোর থেকে নতুন অটো অনেক বেশি লাভজনক। ৩০০ টাকার গ্যাস ভরলে সারা দিন ভাড়া খাটা যায়। কিন্তু পুরনো অটোতে সেই খাতে খরচ কিছুটা হলেও বেশি। গ্যাসের অটো চালানো অনেক বেশি সুবিধাজনক বলেও তাঁরা জানান।

Advertisement

তা হলে চালকেরা গ্যাসের অটো চালাচ্ছেন না কেন?

কারণ হিসেবে উঠে আসছে দু’টি দিক। প্রথমত, নতুন অটোর দাম প্রায় দু’লক্ষ টাকা। কিস্তিতে নিলেও প্রায় আশি হাজার টাকার কাছাকাছি প্রথমে জমা করতে হচ্ছে। এই টাকাটা খরচ করা সম্ভব হচ্ছে না অনেকের পক্ষে। এ ক্ষেত্রে সরকারি সহায়তাও তেমন মিলছে না বলে অভিযোগ।

দ্বিতীয়ত, গ্যাস ভরার পাম্প অনেক কম। ফলে নিয়মিত গ্যাস ভরার ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন অটো চালকেরা।

কুলতলি অঞ্চলে বহু দিন ধরে অটো চালাচ্ছেন এ রকম কয়েকজন চালক জানালেন, শহরের দিকে যাঁরা নতুন অটো কিনেছেন, তাঁরা বেশির ভাগই পুরনো অটো গ্রামাঞ্চলে বিক্রি করছেন। কারণ, গ্রামাঞ্চলে এখনও পুরনো অটোর চল আছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা আর চেষ্টা করেও পুরনো অটো বিক্রি করতে পারছি না। সরকার থেকে যদি এই অটোগুলি নিয়ে কিছু টাকার ব্যবস্থা করে, তা হলে আমরাও নতুন অটো কিনতে পারি।’’

গ্যাস পাওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে চালকদের। কয়েকটি বাছাই পেট্রল পাম্পেই গ্যাসের লাইসেন্স আছে। তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পেট্রোল পাম্পে দীর্ঘ লাইন দিতে হচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে ব্যবসায়। সুযোগ বুঝে রান্নার গ্যাস বেআইনি ভাবে অটোয় ভরে দেওয়ার চক্রও মাথাচাড়া দিচ্ছে। কিন্তু পুলিশি ধরপাকড়ের জেরে সেটাও নিয়মিত পাওয়া যাচ্ছে না। সমস্যায় পড়ছেন চালকেরা।

জয়নগর-দক্ষিণ বিষ্ণুপুর অটো রিকশা ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান সর্দার বলেন, ‘‘অটো চালকদের আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনা করেই আমরা প্রশাসনের কাছে নতুন অটো কেনার জন্য আরও কিছু দিন সময় চেয়ে নিয়েছি। লোন, কিস্তি সব রকম ব্যবস্থাই করা হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গতিধারা প্রকল্পের মাধ্যমেও অনেকে লোন নিয়ে নতুন অটো কিনছেন। আশা করছি ২০১৯ সালের মধ্যেই এই অঞ্চলে সব গ্যাসের অটো চালু করা যাবে।’’

গ্যাস ভরার সমস্যার সমাধানের বিষয়ে মান্নান জানান, বেশ কয়েকটি জায়গায় নতুন পাম্প তৈরির ব্যাপারে কথা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement