দুর্বল ইন্টারনেটের জেরে মার খাচ্ছে পর্যটনশিল্পও

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বকখালি শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৮ ০৬:২০
Share:

পরিষেবা: চালু এসি বাস।— নিজস্ব চিত্র

গত সপ্তাহ থেকে এখানে চালু হয়েছে সরকারি এসি বাস পরিষেবা। সপ্তাহের শেষে সে কারণে পর্যটকদের ভিড়ও একটু বেড়েছে। কিন্তু তাতে কী? বর্ধিত পর্যটক সংখ্যা না আবার কমতির দিকে যায় স্রেফ ইন্টারনেটের কারণে! কেননা, বকখালিতে ইন্টারনেট পরিষেবার অবস্থা অত্যন্ত বেহাল।

Advertisement

দীর্ঘ দিন ধরেই অবশ্য এ রকম অবস্থা বকখালিতে। তার জেরে যেমন যোগযোগ ব্যবস্থা মার খাচ্ছে, তেমনই নেট ব্যাঙ্কিং এবং এটিএমের মতো পরিষেবাও তলানিতে। জেলার প্রশাসনিক কর্তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘সমস্যার কথা জানি। শীঘ্রই বেসরকারি ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী কোনও সংস্থাকে এলাকা পরিদর্শনে যেতে অনুরোধ করব, যাতে এর একটা সমাধান বের হয়। একই সঙ্গে বকখালিতে এটিএম পরিষেবাযুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলব পরিষেবা জোরদার করার জন্য।’’

বকখালি বেড়াতে এসে জরুরি বার্তা পাঠানোর প্রয়োজন হয়েছিল হুগলির হরিশ মান্নার। কিন্তু ইন্টারনেট পাননি তিনি। পাননি সেখান থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে মূল ভূখণ্ডের দিকে এসেও। বাধ্য হয়ে তাঁকে ৪০ মিনিট পথ পাড়ি দিয়ে নামখানায় আসতে হয়েছিল। হরিশবাবুর কথায়, ‘‘আগেও বকখালি এসেছি। কিন্তু এ রকম হঠাৎ জরুরি প্রয়োজন হয়নি। পরিষেবার এ রকম হাল দেখে খুবই আশ্চর্য হয়েছি।’’

Advertisement

হরিশ মান্নার মতো অনেকেরই এই তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে বকখালি বেড়াতে গিয়ে। জরুরি প্রয়োজন মেটাতে পারছেন না অনেকেই। আবার, বেড়াতে গিয়ে জরুরি নয়, কিন্তু শখ মেটানোর ইচ্ছাও তো হতে পারে! কলেজ পড়ুয়া বনানী আঢ্য যেমন। বকখালি গিয়ে সেলফি তুলেছিলেন দেদার। কিন্তু নিম্নমানের ইন্টারনেট পরিষেবার কারণে তিনি সেখান থেকে ছবি ফেসবুকে আপলোড করতে পারেননি। শহরে ফিরে এসেই সারতে হয়েছিল সেই কাজ। রীতিমতো বিরক্ত, জানালেন বনানী।

পর্যটকরাই শুধু নন, হোটেল মালিকেরাও বিরক্ত। বকখালির একটি হোটেলের ম্যানেজার বাসুদেব ধারামি বলেন, ‘‘এসি বাসের জন্য পর্যটক কিছু বেড়েছে। শনিবার কয়েকজন গ্রাহক আধার কার্ড আনতে ভুলে গিয়েছিলেন। ডাউনলোড করেও তা দেখাতে পারেননি তাঁরা। বাধ্য হয়ে তাঁদের ফেরাতে হল।’’ নিত্যদিনের এই সমস্যা এড়াতে কয়েকটি হোটেলের মালিক ওয়াইফাই পরিষেবা চালু করে গ্রাহক টানার চেষ্টা করছেন। তাঁদেরই একজন জানালেন, ‘‘গ্রাহক নিজের নেটওয়ার্ক না পেয়ে ওয়াইফাই খুঁজছেন। তা-ও বসানো হয়েছে হোটেলে। কিন্তু তার পরেও সেই টুজি স্পিড। লাভ কিছু হচ্ছে না।’’

হোটেল মালিকদের একটি সংগঠনের নেতা অপূর্ব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জাতীয় স্তরের ব্যবসায় আমরা ঢুকতেই পারছি না দুর্বল ইন্টারনেটের জন্য। নেট ব্যাঙ্কিং বা সোয়াইপ কার্ড চালুর সমস্যা রয়ে যাচ্ছে। ইন্টারনেটের জন্য অনলাইন বুকিংয়েও সমস্যা হচ্ছে।’’ বাইরে থেকে বুকিং হলেও কারা কারা কোন হোটেল বুকিং করছেন, তার তথ্য হোটেলে পৌঁছচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন