হাসপাতাল যাওয়ার পথেই অনেক রোগীর মৃত্যু হয়

এলাকায় ঠিকমতো পরিষেবা পাচ্ছেন না মানুষ বলে অভিযোগ। ফলতার বিএমওএইচ সুরজিৎ বাগ বলেন, ‘‘ওই নতুন ভবনে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার জন্য সব রকম চেষ্টা চলছে। খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

দিলীপ নস্কর

ফলতা শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৭ ১৬:০০
Share:

নীল সাদা রঙের ঝা চকচকে ভবনটি নির্মাণ হয়েছিল বছর দেড়েক আগেই। কথা ছিল ১০ বেডের হাসপাতাল হবে। কিন্তু কর্মীর অভাবে ফলতা ব্লকের ঢোলটুকারি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশে এই ভবনে আজও চালু হল না হাসপাতাল।

Advertisement

এলাকায় ঠিকমতো পরিষেবা পাচ্ছেন না মানুষ বলে অভিযোগ। ফলতার বিএমওএইচ সুরজিৎ বাগ বলেন, ‘‘ওই নতুন ভবনে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার জন্য সব রকম চেষ্টা চলছে। খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

বছর চল্লিশ আগে ঢোলটুকারি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি অনুমোদন পায়। সে সময় প্রায় ৮ বিঘা জমির উপরে একতলা ভবনের স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু হয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের থাকার জন্য পাঁচটি আবাসনও নির্মাণ করা হয়েছিল। ওই পুরনো ভবনটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় দেওয়ালে ফাটল ধরেছে।

Advertisement

ওই ভবন থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবা সরিয়ে নিতে পাশে আরও একটি একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। স্বাস্থ্য দফতর, সাংসদ, ও জেলা পরিষদের তহবিল থেকে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকায় তৈরি ওই নতুন ভবনে ১০ বেডের হাসপাতাল তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। বছর দেড়েক আগে ওই ভবনের কাজ শেষ হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য পরিষেবা শুরু করা যায়নি। এখন ওই ভবনের আশেপাশে মদের আসর বসে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। দুষ্কৃতীরা কাঠের জানলা দরজাগুলিও খুলে নিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। এর মধ্যে আবার পুরনো ভবন থেকেও কোনও পরিষেবা মিলছে না।

এখন ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছেন একজন ফার্মাসিস্ট, একজন নার্স ও গ্রুপ ডি বিভাগে একজন। একজন চিকিৎসক আছেন ঠিকই। কিন্তু প্রত্যেকদিন তিনি আসতে পারেন না। তাঁকে পাশের উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটিও সামালাতে হয়। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন ওই চিকিৎসক আসেন বলে স্থানীদের দাবি।

ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল, দুপুর দেড়টার আগেই চিকিৎসক বেরিয়ে গিয়েছেন। এক শিশু পেটে ব্যথায় কাতরাচ্ছে। চিকিৎসক না পেয়ে ফার্মাসিস্টের কাছেই নিয়ে গেলেন ওই শিশুর মা। কোনও পরীক্ষা না করেই ফার্মাসিস্ট ওই শিশুকে ওষুধ দিয়ে দিলেন।

এই ঘটনা এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রায়ই ঘটে। চিকিৎসক না থাকলে ওই ফার্মাসিস্ট রোগী দেখে ওষুধ দিয়ে দেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই হাসপাতাল চালু না হওয়ায় রাতে রোগী নিয়ে ছুটতে হয় ডায়মন্ড হাবরাব জেলা হাসপাতালে। দূরের ওই হাসপাতালে রোগী নিয়ে যেতেই নাজেহাল হন মানুষ। শুধু তাই নয়, অনেক সময় পথেই রোগীর মৃত্যু হয়।

ফলতার বিধায়ক তমোনাশ ঘোষ বলেন, ‘‘ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালুর জন্য সমস্ত রকমের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নতুন করে কর্মী নিয়োগের জন্য দফতরে জানানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন