রীতা মণ্ডল।
এক প্রসূতির মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে মথুরাপুর গ্রামীণ হাসপাতালে তাণ্ডব চালানো হল শনিবার। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের মারধর করা ছাড়াও হাসপাতালে ভাঙচুর চালানোরও অভিযোগ ওঠে মৃতার আত্মীয়স্বজন এবং স্থানীয় লোকজনের বিরুদ্ধে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালের সিস্টার ইনচার্জকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। লাঠির আঘাতে তাঁর মাথা ফাটে। হামলায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ মৃতার পরিবারের তিন জনকে গ্রেফতার করেছে।
রীতা মণ্ডল (২৩) নামে মৃত ওই প্রসূতি রায়দিঘির বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর স্বামী হারান মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘স্ত্রীকে এখান থেকে অনেক দিন আগেই অন্যত্র নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু হাসপাতাল ছাড়েনি। অন্যত্র নিয়ে গেলে এমন হতো না।’’ মথুরাপুরের বিএমওএইচ জয়দেব রায় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ মানেননি। তাঁর দাবি, ‘‘আমরা সব রকম চেষ্টা করেছি। প্রসূতির অবস্থা সঙ্কটজনক ছিল বলেই অন্যত্র নিয়ে যেতে দিইনি। রাস্তাতে কিছু হয়ে যেতে পারত, এই আশঙ্কা ছিল। রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ায় তিনি মারা যান।’’ পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ায় দিন কুড়ি আগে রীতাকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। প্রথম থেকেই তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক ছিল। শুক্রবার রাত ২টো নাগাদ তাঁর প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। হাসপাতালে তখন একজন চিকিৎসক এবং দু’জন নার্স ছিলেন। রীতার পরিবারের লোকজনও হাসপাতালে তখন ছিলেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁরা রীতাকে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চাপ দিতে থাকেন বলে অভিযোগ। শেষে ‘বন্ডে’ সই করে প্রসূতিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যম্বুল্যান্সে তোলেন। হাসপাতাল থেকে এ কথা জেনে বিএমওএইচ রীতাকে অ্যাম্বুল্যান্স থেকে নামিয়ে ফের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এর কিছুক্ষণ পরে হাসপাতালে রীতা মারা যান। তার পরেই শুরু হয় গোলমাল।তবে, মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশ বা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে চিকিৎসায় গাফিলতির কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। পুলিশ জানায়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তিন জনকে ধরা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।