প্রতীকী ছবি।
তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে আনা হয়েছিল মন্দিরে বিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু তিনি এসে বিয়েটাই রুখে দিলেন। কারণ, যারা বিয়ে করতে এসেছিল, তারা নাবালক-নাবালিকা।
গোবরডাঙার বাসিন্দা বছর বাষট্টির পুরোহিত দেবরঞ্জন চক্রবর্তীকে মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ ডেকে আনা হয়েছিল। পাত্রপাত্রী পরিণত বয়সের নয় বুঝতে পেরে তিনি বেঁকে বসেন। তিনি বিয়ে দিতে রাজি হননি। দেবরঞ্জনবাবুর দাবি, তাঁকে টাকাও দিতে চেয়েছিল ওই কিশোর-কিশোরী। কিন্তু কোনও কথা কানে না তুলে তিনি খবর দেন স্থানীয় গোরবডাঙা পুরসভার কাউন্সিলর রত্না বিশ্বাসকে। পুলিশও পৌঁছয়কিশোর-কিশোরীকে উদ্ধার করে তারা নিয়ে যায় ফাঁড়িতে।
পরে পুলিশের তরফে ওই কিশোর-কিশোরীকে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বুধবার তাদের বারসতে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে তোলা হয়। হাবরা চাইল্ড লাইন সংস্থার সদস্য প্রকাশ দাস বলেন, ‘‘কমিটির কাছে ওদের পরিবারের তরফে মুচলেকা দেওয়া হয়েছে। তারা বাড়িতে ফিরে গিয়েছে। মেয়েটি জানিয়েছে, সে এখন লেখাপড়া করবে। আমরাও তাকে সহযোগিতা করব।’’
পুলিশ জানিয়েছে, মেয়েটির বয়স ১৪ বছর। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। ছেলেটির বয়স সতেরো। দু’জনের বাড়ি গোবরডাঙায়।
দেবরঞ্জনবাবুর ভূমিকার তারিফ করছেন পুলিশ কর্তারা। হাবরা থানার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরোহিতমশাইয়ের জন্যই বিয়েটা আটকানো গিয়েছে। এমন ভাবে যদি মানুষ এগিয়ে আসেন, তা হলে আমাদেরও নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করতে সুবিধা হবে।’’
জ্যোতিষ চর্চাও করেন দেবরঞ্জনবাবু। মাঝে মধ্যে যজমানদের বাড়িতে পুজো সারেন। বিয়ের মন্ত্রও পড়ে দেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওই কিশোর-কিশোরীকে দেখেই মনে হয়েছিল, ওদের দিয়ে বিয়ের মন্ত্র পড়ালে পাপের ভাগী হব আমি। সে জন্য পুলিশ ও কাউন্সিলরকে খবর দিয়েছিলাম।’’