প্রলোভনে পা নয়, বোঝাল প্রশাসন
Magrahat

‘নিও-নর্মাল’ জীবনে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ

বর্তমান পরিস্থিতিতে বহু ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা নিয়ে তাঁদের উদ্বেগের কথা জানান। তাঁদের ভেঙে না পড়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন বিডিও।

Advertisement

রাজীব চট্টোপাধ্যায়

মগরাহাট শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:৫৬
Share:

ফাইল চিত্র

হাজির সঙ্কট। শুরু নিরসনের চেষ্টাও।কর্মক্ষেত্র হোক বা পড়াশোনার জগৎ, কিংবা গৃহস্থের অন্দরমহল— করোনা-কালে সর্বত্রই নেমে এসেছে অভূতপূর্ব সঙ্কট। প্রায় সাত মাস ধরে স্কুলে যেতে না-পারা পড়ুয়া মুখ ব্যাজার করে বসে রয়েছে ঘরে। খুদে পড়ুয়া দেখছে, মেজাজ বিগড়লেই মাকে অনবরত মারধর করছে কাজ হারানো বাবা। যার প্রভাব এসে পড়ছে কচি মনে। সঙ্কটের সুযোগে সক্রিয় হয়েছে পাচারচক্র। নাবালিকাদের প্রলোভন দেখাচ্ছে তারা। অর্থ-সঙ্কটে পড়ে বাবা-মা তাঁদের নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

Advertisement

এই সঙ্কট থেকে পড়ুয়াদের উদ্ধার করতে ‘ওয়েবিনার’-এর মাধ্যমে পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করল মগরাহাট ১ ব্লক প্রশাসন। ওয়েবিনারের মাধ্যমে স্কুল পড়ুয়াদের চাঙ্গা রাখা এবং ‘নিও-নর্মাল’ জীবনে পড়াশোনার নতুন বিষয় ও জীবিকার সন্ধান দিচ্ছে প্রশাসন। বিডিও (মগরাহাট-১) বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘রবিবার আমাদের ওয়েবিনারে একশো স্কুল পড়ুয়া যোগ দিয়েছিলেন। পড়াশোনা এবং অন্য কিছু সমস্যা সম্পর্কে তাঁরা আমাদের জানিয়েছিন। আমরাও উত্তর দিয়েছি।’’

লকডাউন-পর্বে জেলায় ৩৮টি নাবালিকা বিবাহ বন্ধ করতে পেরেছিল প্রশাসন। প্রশাসনের নজরে এসেছে, সঙ্কটে পড়া অনেক গৃহস্থই তাঁদের পরিবারের নাবালিকার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। পাচারচক্রও সক্রিয়।বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘লকডাউনের কারণে অর্থনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। অনেকেই পরিবারের নাবালিকাকে বিয়ে দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ছাত্রীদের বললাম, ‘তোমরা বাবা-মাকে বোঝাও যে, বিয়ে দিয়ে দিলেই সঙ্কট কাটবে না।’’ সঙ্গে যোগ করেন: ‘‘ছাত্রীদের আরও বলেছি, তাঁরা যেন কোনও প্রলোভনে পা না দেন। সিনেমায় সুযোগ দেওয়া বা মোটা মাইনের চাকরি— অনেক কিছুর টোপ দিয়ে পাচারের চেষ্টা হতে পারে।’’ দেবাশিসবাবু বলেন ‘‘গুগল মিটের মাধ্যমে ওয়েবিনার করলে সর্বোচ্চ ১০০ জন তাতে যোগ দিতে পারেন। আমরা লক্ষ্য করেছি, অন্তত আরও দেড়শো ছাত্র-ছাত্রী ওয়েবিনারে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেও পারেননি। আমরা এই উদ্যোগ জারি রাখব।’’

Advertisement

বর্তমান পরিস্থিতিতে বহু ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা নিয়ে তাঁদের উদ্বেগের কথা জানান। তাঁদের ভেঙে না পড়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন বিডিও। তিনি বলেন, ‘‘অনেক পড়ুয়া ডব্লিউবিসিএস এবং আইএএস পরীক্ষায় বসতে চান। কী ভাবে এগোবেন, কী করবেন, তা জানতে চেয়েছিলেন। আমরা সব তথ্য তাঁদের জানিয়েছি। আমার মোবাইল নম্বরও দিয়েছি। ওঁরা আমাকে হোয়াটস্অ্যাপে প্রশ্ন পাঠাচ্ছেন। আমি উত্তর দিচ্ছি।’’ মগরাহাটের বেশ কয়েকজন স্কুলশিক্ষক ‘উদ্যোগী’ নামে একটি হোয়াট্‌সঅ্যাপ গ্রুপ চালু করেছেন। রবিবারের ওয়েবিনারের উদ্যোগ মূলত তাঁদেরই নিয়েছিলেন। ওই হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপের অন্যতম অ্যাডমিন পেশায় স্কুলশিক্ষক পল্লব সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘কলকাতার দু’টি, কোচবিহারের একটি এবং মগরাহাটের ১০টি স্কুলের পড়ুয়ারা ওয়েবিনারে যোগ গিয়েছেন। এর আগেও আমরা একটি ওয়েবিনার করি। সেখানে ছাত্রছাত্রীদের কাউন্সেলিং করানো হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন