মৃত লোকনাথ দাস । শনিবার। নিজস্ব চিত্র
প্রতিবাদী খুনে মূল অভিযুক্ত তাঁর দাদাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অনৈতিক কাজকর্ম চালানোর অভিযোগে ভেঙে দেওয়া হয়েছে তাঁদের ঝুপড়ি। মারধরের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তাঁকেও খুঁজছিল পুলিশ। ১০ দিন ফেরার থাকার পরে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি থেকে শনিবার উদ্ধার হল লোকনাথ দাস নামে ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ। পুলিশ জানায়, তিনি আত্মঘাতী হন।
পুলিশ জানিয়েছে, স্ত্রী তাপসীকে নিয়ে সন্দেশখালি এলাকায় একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন লোকনাথ। প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁকে সে ভাবে বাড়ি থেকে বেরোতে দেখা যেত না। এ দিন দুপুরে গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো অবস্থায় তার দেহটি ঝুলতে দেখেন কয়েক জন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
গত ২ মে উল্টোডাঙার মুচিবাজার এলাকায় খুন হন লাল্টু মজুমদার নামে এক ব্যক্তি। পুলিশ জানিয়েছিল, স্থানীয় কিছু যুবক এক বাসচালককে মারধর করছে দেখে তাঁকে বাঁচাতে যান লাল্টু। তখন লাল্টুকেও মারধর করা হয়। ঘটনায় লোকনাথের দাদা ভোলা দাসকে ধরে পুলিশ। অভিযোগ, সেই লাল্টুকে মারধর করেছিল।
ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকাহত দিদি।
অভিযোগ, দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় পড়ে থাকার পরে রাত দু’টো নাগাদ আর জি করে ভর্তি করানো হয় লাল্টুকে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। এর পরেই ভোলাদের ঝুপড়িতে গিয়ে লাল্টুর পাড়ার লোকজন ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। ভোলাদের ঘর ভাঙার পাশাপাশি মারধর করা হয় ভোলার পরিবারের লোকজনকে। তখন থেকেই ফেরার ছিল ভোলারা। পরে ভোলা-সহ চারজনকে গ্রেফতার হলেও লোকনাথ ধরা পড়েনি।
এ দিন উল্টোডাঙায় ভোলাদের ঝুপড়িতে গিয়ে দেখা গেল প্রতিবেশীদের জটলা। সীতা সর্দার নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বললেন, ‘‘ভয়েই ছেলেটা এরকম করল। ও কিন্তু মারামারির সময়ে ছিল না।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘এখানে থাকাই যাচ্ছে না। ঝুপড়ি ভেঙে দিতে বলেছে পুলিশ। কাউন্সিলরও আমাদের উচ্ছেদ করতে চাইছেন। একজন অপরাধ করল তার শাস্তি আমরা কেন পাব?’’
কলকাতা পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তী বললেন, ‘‘পুলিশ খুঁজছিল। নিজেই আত্মহত্যা করেছে। দোষ করেছে বলেই এই পথ বেছে নিয়েছে।’’