পুজো কমিটিতে রণজিৎ-হামিদরা

ধ্বংসের পরে হিন্দু-মুসলমান কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পুড়ে যাওয়া দোকান-বাড়ি গড়ে তুলেছেন। চাঁদা তুলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরাই এখন পুজোর আয়োজনে লেগে পড়েছেন।

Advertisement

নির্মল বসু

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৫:২৮
Share:

মণ্ডপের সামনে। —নিজস্ব চিত্র।

কয়েক মাস আগের কথা। বসিরহাটে তখন উত্তেজনা চরমে। দোকানপাট পুড়ছে। লুঠতরাজ চলছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে উড়ে আসছে ঢিল-পাটকেল। কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়ে, লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি সামলাতে হিমসিম খাচ্ছেন আইনরক্ষকেরা। চতুর্দিকে পরিস্থিতি অঘোষিত বন্‌ধের মতো। অনেকে ভয়ে বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। প্রাণ গিয়েছে এক বৃদ্ধের।

Advertisement

সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে বসিরহাট। উৎসবের মরসুমের তোড়জোড়ও চলছে।

ধ্বংসের পরে হিন্দু-মুসলমান কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পুড়ে যাওয়া দোকান-বাড়ি গড়ে তুলেছেন। চাঁদা তুলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরাই এখন পুজোর আয়োজনে লেগে পড়েছেন।

Advertisement

বসিরহাটের পাইকপাড়া ছিল গণ্ডগোলের মূল কেন্দ্রে। এখানকার পুজো কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক রণজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘ক’দিন আগেও দুষ্কৃতীদের অত্যাচারে এখানকার মানুষ ভয়ে কাঁটা হয়েছিলেন। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বিভেদ সৃষ্টি করতে বহিরাগতরা এখানকার দোকান-বাড়ির উপরে চড়াও হয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুঠতরাজ চালায়। কিন্তু এত করেও পুজোর আমেজটা নষ্ট করতে পারেনি ওরা।’’

পুজো এ বার হবে কিনা, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় ছিলই। কিন্তু তেমনটা হয়নি। একপক্ষ যেমন ইদের আনন্দ মেতেছে, অন্য পক্ষও ঠিক করে নেয়, শান্তির বার্তা দিতেই পুজো বন্ধ রাখলে চলবে না। অনেক বৈঠকের পরে এখন দুই সম্প্রদায়ের মানুষই পুজোর উদ্যোগে সামিল হয়েছেন, ঠিক অন্যবারের মতোই। আব্দুল হামিদ মণ্ডল বলেন, ‘‘এখানকার আশি শতাংশ দোকানি মুসলিম। তাঁরা কিন্তু পুজোর চাঁদা দেন। আনন্দে মাতেন। আমরা হিন্দু-মুসলমান সকলে মিলে ইদের অনুষ্ঠানের মতোই পুজোর দিনগুলিতেও আনন্দ করি।’’

যদিও হামিদ-রণজিৎদের কথায়, ‘‘আমাদের এখানকার মানুষের মধ্যে যথেষ্ট সুসম্পর্ক আছে। বহিরাগত দুষ্কৃতীরা তা ভাঙার চেষ্টা করেও সফল হয়নি। সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলি পেরিয়ে আসতে পেরেছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement