গণধর্ষণের শিকার হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে সে। প্রায় ১২ দিন পরে হাবরার ছাত্রীটির অবস্থার কিছুটা উন্নতিতে আশার আলো দেখছেন বারাসত হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের চিকিৎসকেরা।
শনিবার দুপুরে ছাত্রীটি নিজের নাম বলতে পেরেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের মতে, এটা ভাল লক্ষণ। তবে, হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই কিশোরীর প্রাথমিক মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে। সম্পূর্ণ সুস্থ না হলে পূর্ণাঙ্গ মেডিক্যাল পরীক্ষা করা সম্ভব নয়।’’ এ দিন হাসপাতালে মেয়েটিরে দেখতে গিয়েছিলেন তার এক কাকিমা। ফিরে তিনি বলেন, ‘‘ও এখনও অসংলগ্ন কথা বলছে। তবে, আমাকে একবার চিনতে পেরেছে। কাকিমা বলে ডেকেছে। কিন্তু তার পরে যে কে সেই। আর চিনতে পারছিল না। ও সুস্থ না হলে কারা ওর উপর নির্যাতন চালাল, তা পুরোপুরি জানা যাচ্ছে না।’’
দিন বারো আগে চোদ্দো বছরের মেয়েটিকে ডেকে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।। সেই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ যে দুই কিশোরকে ধরেছে, তাদের এক জন ছাত্রীটির সহপাঠী। তাই আতঙ্কে ছাত্রীটির পড়শি মহিলাদের কেউ কেউ তাঁদের মেয়েদের ছেলেবন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশা করতে দিতে নারাজ। এক মহিলার কথায়, ‘‘এই ঘটনার পরে আর কী করে মেয়েদের মিশতে দিই!’’ এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা গেল বাসিন্দারা ওই অসহায় মেয়েটির উপর নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন। তাঁরা চান, প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি। ঘটনার প্রতিবাদে গ্রামের মানুষ আজ, রবিবার এলাকায় একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এক যুবকের কথায়, ‘‘আমরা ওই অমানবিক ঘটনায় জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে পথে নামছি।’’
অভিযুক্তেরা কিশোর হলেও গ্রামবাসীর ক্ষোভ গিয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দা সুবীর কুণ্ডুর উপরেও। এক ব্যক্তিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে সুবীরকে শুক্রবার রাতে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গ্রামবাসীর অভিযোগ, গ্রামের ছেলেমেয়েদের কুপথে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও সুবীরের ভূমিকা রয়েছে। ওই ছাত্রীকে যারা ধর্ষণ করেছে তাদের মদত দিত সুবীর। পুলিশ সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।