বাজেয়াপ্ত স্পিরিটের বোতল। ফাইল চিত্র
ক্রেতা সেজে ‘র’ স্পিরিট কেনার কথা বলেছিলেন রাজ্য আবগারি অফিসারেরা। প্রথম দিন কিনেওছিলেন। তাতে সেই অফিসারদের উপরে বিশ্বাস জন্মায় স্পিরিটের চোরাকারবারিদের। বুধবার সকালে আবার ডেকে পাঠালে ফাঁদে পা দেয় এক যুবক। তাকে ধরে জেরা করে খড়দহে ওই স্পিরিট রাখার গুদামের হদিস পান অফিসারেরা। সেখানে হানা দিয়ে আট হাজার লিটার চোরাই ‘র’ স্পিরিট বাজেয়াপ্ত করেছে আবগারি দফতর। লিটার প্রতি ২০০ টাকা করে দাম নিচ্ছিল চোরাকারবারিরা। আবগারি দফতর সূত্রের খবর, ধৃতের নাম শিবশঙ্কর বিশ্বাস। আসল কারবারি তার মামা নিমাই বিশ্বাস। তার খোঁজ চলছে।
এই ‘র’ স্পিরিট আসলে কী?
আবগারি দফতর সূত্রের খবর, সরকারের নিয়ম মেনে কিছু ব্যবসায়ী এই ‘র’ স্পিরিট তৈরি করেন, যা ১০০ শতাংশ খাঁটি ইথাইল অ্যালকোহল। বিশাল কন্টেনারে ভরে সেই স্পিরিট পাঠানো হয় অন্য ব্যবসায়ীদের কাছে। এই ব্যবসায়ীরা সেই স্পিরিট তরলীকৃত করে সেখান থেকে মূলত মদ তৈরি করেন। অন্য কাজেও লাগে সেই তরল স্পিরিট। এই দুই ধরনের ব্যবসায়ীদেরই সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। অভিযোগ, কন্টেনার ভর্তি স্পিরিট এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পাঠানোর সময়েই এই চোরাকারবারিরা চালকদের সঙ্গে যোগসাজশ করে মাঝপথে কিছু ‘র’ স্পিরিট সরিয়ে নেয়। মূলত যারা বেআইনি মদের কারবার করে, তারাই এই স্পিরিট কেনে।
বছরখানেক আগে আবগারি অফিসারেরা তিন জেলায় অভিযান চালিয়ে অন্যদের সঙ্গে নিমাইকেও ধরেছিলেন। তখন নিমাই জানায়, তার নিজস্ব কোনও গুদাম নেই। এক মাস জেলে থেকে জামিনে ছাড়া পায় সে। সম্প্রতি আবার উঠে আসে নিমাইয়ের নাম। দিন কয়েক আগে ক্রেতা সেজে এক অফিসার ফোন করে ওই ‘র’ স্পিরিট কিনতে চান। তখন লোক পাঠিয়ে আট হাজার টাকায় দু’পেটি স্পিরিট বিক্রি করে নিমাই। প্রতি পেটিতে ২০ লিটার করে স্পিরিট থাকে। বুধবার পাঁচ পেটি চাওয়া হয়। নিমাই শিবশঙ্করকে পাঁচ পেটি পাঠায়। বরাহনগরে একটি গলির মধ্যে সেই পেটি হাতবদলের সময়েই শিবশঙ্করকে ধরা হয়। তাকে জেরা করে জানা যায়, স্পিরিট রাখতে খড়দহে বা়ড়ি ভাড়া নিয়েছিল নিমাই।