আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ডাকাতি করল একদল দুষ্কৃতী। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ডায়মন্ড হারবার থানার বোলসিদ্ধি-কালীনগর পঞ্চায়েতের তালডাঙা গ্রামের দুটি বাড়িতে। পুলিশ জানিয়েছে, সোনা, টাকা এবং মোবাইল মিলিয়ে খোয়া গিয়েছে প্রায় লক্ষাধিক টাকার জিনিস। এই ঘটনায় বুধবার স্থানীয় এক চোলাই বিক্রেতাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও রাত পর্যন্ত অপরাধীদের নাগাল পায়নি পুলিশ। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘটনাস্থল থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও রাতে এলাকায় পুলিশের কোনও টহলদারি ছিল না।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার মধ্যরাতে এলাকায় তালডাঙা ব্রিজের কাছে দিলীপ হালদার নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে দেওয়াল টপকে বাড়িতে ঢোকে ৬-৭ জনের একটি ডাকাত দল। দরজার খিল ভেঙে বাড়ির সদস্যদের হাত পিছমোড়া করে বেঁধে ফেলে ডাকাতরা। বাড়ির থেকে কিছু গয়না, ৪টি মোবাইল নেওয়ার পর চাবি নিয়ে আলমারি খুলে প্রায় ৮ হাজার টাকা নিয়ে সেখান থেকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। দিলীপবাবুর ছেলে প্রহ্লাদ বলেন, ‘‘কালো কাপড়ে মুখ ঢাকা ছিল সকলের। বয়স ২০-২৫ এর মধ্যে। থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।’’ প্রহ্লাদ শিয়ালদার একটি কারখানায় কাজ করে।
এ দিকে একটি দল যখন দিলীপবাবুর বাড়িতে তাণ্ডব চালাচ্ছে, রাস্তার ঠিক উল্টো দিকে রামলাল হালদারের বাড়িতে তখন ঢুকে পড়ে ডাকাত দলের বাকিরা। অভিযোগ, বাইরে আওয়াজ পেয়ে দরজা না খোলায় একই কায়দায় জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে মোবাইল ফোন, গয়না এবং কয়েক হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। রামলালবাবুর ছেলে কিশোর বলেন, ‘‘মেয়ে প্রিয়াঙ্কার বিয়ের জন্য একটু একটু করে গয়না গড়িয়েছিলাম। সব চলে গেল। শো-কেস ভেঙে পয়সার ভাঁড় পর্যন্ত নিয়েছে।’’ এমনকী, কিশোরের থেকে কোমরের মাপ জেনে তাঁর কয়েকটি প্যান্টও নিয়ে গিয়েছে ডাকাতেরা। এরপর বাড়িতে এনে রাখা ডাব এবং ফলও কেটে খেয়েছে তারা। যাওয়ার সময় রামলালবাবুর বিড়ির প্যাকেট ও দেশলাইটিও ছাড়েনি। তারপর দুটি বাড়িরই দরজা বাইরে থেকে আটকে দিয়ে চলে যায় ডাকাত দলটি।
এ ক্ষেত্রে এলাকায় ফাঁড়ির পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চোলাইমদের ঠেক গজিয়ে উঠেছে নানা জায়গায়। স্থানীয় বাসিন্দা বলরাম হালদার বলেন, ‘‘এলাকায় এ ভাবে বেআইনি মদের ঠেক চালানোর প্রতিবাদে প্রায় ৪ মাস আগে গণঅভিযোগ দেওয়া হয়েছে থানায়। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।’’ একের পর এক ডাকাতি হচ্ছে এরপরও পুলিশ রাতে টহল দেয় না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।