নজরদারির পরেও গুজব বসিরহাটে

গুজবে কান দেবেন না— সারা বসিরহাট জুড়ে চলছে মাইকে চলছে এই প্রচার। কিন্তু শুনছে কে? বোঝাতে গেলে চলছে গালিগালাজ। ধাক্কাধাক্কি, চিৎকার। শনিবারও সারা দিন ধরে এই ছবি দেখল বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন ডাকঘর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৭ ০১:৪৯
Share:

গুজবে কান দেবেন না— সারা বসিরহাট জুড়ে চলছে মাইকে চলছে এই প্রচার। কিন্তু শুনছে কে? বোঝাতে গেলে চলছে গালিগালাজ। ধাক্কাধাক্কি, চিৎকার। শনিবারও সারা দিন ধরে এই ছবি দেখল বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন ডাকঘর।

Advertisement

কেন্দ্রীয় সরকারের ‘বেটি পড়াও, বেটি বাঁচাও’ প্রকল্পে নির্দিষ্ট ফর্ম জমা দিলেই মিলবে ২ লক্ষ টাকা—গত কয়েক দিন ধরে এই গুজব ছড়িয়েছে বসিরহাটের সীমান্তবর্তী নানা এলাকায়। বলা হচ্ছে, ফর্ম পূরণ করে স্পিড পোস্টে দিল্লির নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাঠাতে পারলেই পাওয়া যাবে ২ লক্ষ টাকা। কিন্তু জেলা প্রশাসনের কর্তারা বার বার জানিয়েছেন, এই তথ্যের কোনও ভিত্তি নেই। বসিরহাট দক্ষিণের প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বেটি পড়াও, বেটি বাঁচাও হল কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সামাজিক সচেতনতামূলক প্রকল্প। এর সঙ্গে টাকা পাওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। কারা, কী উদ্দেশ্যে এই বিভ্রান্তিমূলক প্রচার করছে, তা পুলিশের দেখা জরুরি।’’ বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিভ্রান্তি দূর করতে পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষে এলাকায় মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও মানুষ বিভিন্ন এলাকার ডাকঘরের সামনে লাইন দিচ্ছেন।’’

শনিবার বসিরহাটের মহকুমাশাসক নীতেশ ঢালি এবং বসিরহাট থানার আইসি নাসিম আখতার শহরের প্রধান ডাকঘরের সামনে লাইনে দাঁড়ানো পুরুষ-মহিলাদের বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেন। তাঁরা জানান, ফর্ম পূরণ করলেই ২ লক্ষ টাকা মিলবে— এ রকম কোনও প্রকল্পের কথা তাঁদের জানা নেই। গুজবে কান না দিয়ে লাইনে দাঁড়ানো লোকজনকে বাড়ি ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন তাঁরা। কিন্তু তাতেও সে ভাবে কাজ হয়নি। উপরন্তু প্রশাসনের কর্তাদের বিরুদ্ধে লাইন থেকে কটূক্তি ভেসে আসতে থাকে। কয়েকজন মহিলা বলতে থাকেন, ‘‘আমাদের সরিয়ে আপনারা কেন্দ্রীয় সরকারের গরিবের জন্য দেওয়া টাকা আত্মসাত করতে চান। সেটা হবে না।’’

Advertisement

লাইনে দাঁড়ানো রোজিনা বিবি, মর্জিনা খাতুন, পারমিতা মণ্ডলেরা স্বরূপনগরের সীমান্তবর্তী গ্রাম থেকে গাড়ি ভাড়া করে বসিরহাট প্রধান ডাকঘরে এসে রাত জেগে লাইন দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, ‘‘যদি সবই গুজব হয়, তা হলে যারা টাকা মিলবে বলে ফর্মের ফটোকপি বিক্রি করছে, তাদের কেন ধরা হচ্ছে না?’’ প্রশাসন জানিয়েছে, যে দোকান থেকে ওই ফর্মের ফটোকপি করা হবে, সেই দোকান সিল করে দেওয়া হবে।

এ দিন প্রশাসনের লাগাতার প্রচারের পরে দিনের শেষে ডাকঘরগুলির সামনে ভিড় সামান্য কমলেও কোথাও কোথাও স্পিড পোস্ট ও রেজিস্ট্রি করতে যে টাকা খরচ হয়েছে, সেটা ফেরত চেয়ে বিক্ষোভ দেখানো শুরু হয়। পুলিশ জানিয়েছে। আজ রবিবার এবং সোমবার মাইকে প্রচার হবে। গুজব কোথা থেকে ছড়ানো হচ্ছে তার খোঁজ চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement