বালি তোলা চলছে ইছামতী থেকেও

নদী থেকে বালি তোলা নিয়ে চোর-পুলিশ খেলা চলছে বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন এলাকায়।    

Advertisement

নির্মল বসু

বসিরহাট শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:০০
Share:

নদী থেকে বালি তোলা নিয়ে চোর-পুলিশ খেলা চলছে বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন এলাকায়।

Advertisement

পুলিশ একটা এলাকায় বালি তোলার সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করছে। অন্য এলাকায় হয় তো তখনই বালি তোলা হচ্ছে। বালি তোলা পুরোপুরি বন্ধ করা যায় কিনা, সে প্রশ্নের উত্তর নেই পুলিশ-প্রশাসনের কাছেও।

সম্প্রতি পুলিশ-প্রশাসন অভিযান চালিয়ে বাদুড়িয়ার লক্ষ্মীনাথপুর গ্রামে ইছামতী নদী থেকে বালি তোলার মেশিন, পাইপ, নৌকা-সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করে। তা নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। বাদুড়িয়ার বিডিও ত্রিভুবন নাথ বলেন, ‘‘লক্ষ্মীনাথপুর গ্রাম-সংলগ্ন ইছামতী থেকে বেআইনি ভাবে বালি তোলা হচ্ছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের আপত্তিতে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’’ ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ, এখনও বাদুড়িয়া-সংলগ্ন এলাকায় আরও অন্তত ১২টি জায়গায় বেআইনি ভাবে বালি তোলা চলছে।

Advertisement

বসিরহাটে কয়েকটি জায়গায় ইছামতী থেকে বালি তোলা বন্ধ হলেও কিছু জায়গায় বালি তোলা এখনও চলছে বলে বাসিন্দারা জানান। অনেক জায়গাতেই ভোরের দিকে নৌকোয় বালি তুলে তা পাড়ে ফেলা হচ্ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী জানালেন, শাসকদলের স্থানীয় নেতা এবং প্রশাসনের একাংশের সঙ্গে কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে মেশিন কিনে বালি তোলার কাজ শুরু করেছিলেন তাঁরা। অনুমতি নিয়েই ব্যবসা চালাতে চান তাঁরা। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। তা সত্ত্বেও অধিকাংশ জায়গায় সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করে বালির ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিকল্প হিসাবে মেশিন ব্যবহার না করে নৌকোয় বালি কেটে পাড়ে আনছেন তাঁরা।

পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বেআইনি বালি তোলা নিয়ে অভিযোগ পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী অভিযান চালানো হয়। এ বিষয়ে বাদুড়িয়ার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে মেশিনের সাহায্যে বালি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানানো হলে অভিযানে নামা হয়।’’

প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, সরকারি অনুমোদন না থাকায় বালি ব্যবসায়ীদের রাজস্ব দিতে হচ্ছে না। পরিকল্পনাহীন ভাবে মাঝ নদী থেকে পাইপের সাহায্যে বালি তোলার ফলে নাব্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রশাসনের দাবি, এ ভাবে বালি তোলায় নদীর গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। এতে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। এক পক্ষের দাবি, বালি কেটে নদীর গভীরতা বাড়ায় উপকারও হচ্ছে। অন্য পক্ষের বক্তব্য, নদীর নাব্যতা নষ্ট করে এবং সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বেআইনি ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় হচ্ছে একদলের। এক পুলিশ অফিসারের কথায়, ‘‘এখনও সরকারি ভাবে নদীর বালি তোলা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি নিয়ে চোর-পুলিশ খেলা হচ্ছে। যেখানে বালি তোলা নিয়ে অভিযোগ হচ্ছে পুলিশ

সেখানে যাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন