kakdwip

ভর্তির ফি নেতাদের পকেটে, শুভেন্দুর দাবি ওড়াল স্কুল কর্তৃপক্ষ

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পঞ্চম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াপিছু ভর্তির জন্য ২৪০ টাকা করে নেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৫১
Share:

এই স্কুলে ভর্তির রসিদ পোস্ট করা হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছবি: সমরেশ মণ্ডল

রাজ্যের সরকারি বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে ভর্তির ফি নেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিজেপি নেতা ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সংক্রান্ত একটি পোস্ট করেন। সেখানে স্কুলে ভর্তির ফি বাবদ তোলা টাকা নেতাদের পকেটে যাচ্ছে কিনা তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। এই পোস্টেই কাকদ্বীপ ব্লকের মানিকনগর সুরেন্দ্রনাথ হাইস্কুলের ২০২২-২০২৩ সালে ছাত্র ভর্তির রসিদের একটি ফটোকপিও জুড়ে দেন শুভেন্দু। সেখানে ছাত্র ভর্তির জন্য ২৪০ টাকা নেওয়ার উল্লেখ রয়েছে। ওই স্কুল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, সরকারি নিয়ম মেনেই এই টাকা নেওয়া হয়। কোনও রাজনৈতিক নেতার নির্দেশে টাকা নেওয়া হয় না।

Advertisement

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পঞ্চম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াপিছু ভর্তির জন্য ২৪০ টাকা করে নেওয়া হয়। এই টাকা খেলাধূলা, পরীক্ষা, ইলেকট্রিক বিল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান-সহ বিভিন্ন খাতে খরচ করা হয়। সেই খরচের হিসাব প্রতি বছর স্কুল শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের কাছে পাঠিয়েও দেওয়া হয়। বর্তমানে স্কুলে প্রয়োজনের তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা কম। ফলে বাধ্য হয়ে আংশিক সময়ের শিক্ষক নিয়োগ করে কাজ চালাতে হচ্ছে। সেই সব আংশিক সময়ের শিক্ষকদের বেতনও দেওয়া হয় এই টাকা থেকে। স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি সুনীলকুমার গিরি বলেন, “স্কুলের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক নেতার যোগসাজশ নেই। সরকারি নিয়ম মেনে স্কুল পরিচালনা করা হয়।” স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রদীপ মণ্ডল বলেন, “সরকারি নির্দেশ মেনে ছাত্রছাত্রীদের থেকে ২৪০ টাকা নেওয়া হয়। তার বেশি নয়। অডিট রিপোর্ট শিক্ষা দফতরে পাঠানো হয়। স্কুলে কোনও দুর্নীতি নেই। কেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আমার স্কুলের ভর্তির রসিদ পোস্ট করেছেন, তা উনিই বলতে পারবেন।” এই স্কুলেরই নবম শ্রেণির এক ছাত্রের অভিভাবক নীহার মাইতি বলেন, “স্কুলে কোনও দুর্নীতি হয় না। কোনও নেতার কথায়ও স্কুল চলে না। পরিচালন কমিটিই ২৪০ টাকা করে ভর্তি ফি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১১ সালে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, স্কুলগুলি ডেভেলপমেন্ট ফি বাবদ সর্বাধিক ২৪০ টাকা নিতে পারবে। কেউ যদি সেই টাকাও দিতে না পারেন, তাহলে আবেদন করলে টাকা মুকুব করার কথাও বলা হয়।

Advertisement

কাকদ্বীপের বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা বলেন, “বিরোধী দলনেতা যে স্কুলের উল্লেখ করেছেন, সেই স্কুল সরকারের নিয়ম মেনেই ভর্তি ফি নিয়েছে। কোনও দুর্নীতি নেই। বাস্তব জিনিসটা উপলব্ধি না করে একটা স্কুলের নাম নিয়ে পোস্ট করা দুর্ভাগ্যজনক। এই ধরনের অবাস্তব বিবৃতি দেওয়া ঠিক নয়।”

বিজেপির মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি প্রদ্যোৎ বৈদ্য বলেন, “স্কুলের বিভিন্ন খাতে খরচের জন্য সরকার থেকে অর্থ বরাদ্দ করা হয়। তাহলে ছাত্রছাত্রীদের থেকে টাকা নেওয়া হবে কেন? বিরোধী দলনেতার মন্তব্য যথোপযুক্ত। এক্ষেত্রে তৃণমূলের নেতারা জড়িত আছে। সরকার এই টাকার কোনও হিসেব নেয় না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন