School vandalized

যৌন নিগ্রহের অভিযোগ গোপালনগরের স্কুলেও, মারধর-ভাঙচুর

আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ যে ভাবে শিক্ষকের উপরে চড়াও হলেন, ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের চোখের সামনেই স্যারকে মাটিতে ফেলে পেটানো হল, তার নিন্দায় সরব শিক্ষকদের অনেকেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোপালনগর শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৬:২৯
Share:

প্রহৃত: মারা হচ্ছে সেই শিক্ষককে। ফাইল চিত্র।

ঘর থেকে টানতে টানতে বের করা হল যাঁকে, তিনি স্কুলের বাংলার শিক্ষক। স্কুল চত্বরে ফেলে লাথি-চড়-কিল-ঘুষি পড়তে লাগল। উইকেটের ঘা পড়ল পিঠে। ক্লাসঘর থেকে উঁকিঝুঁকি দিয়ে স্যারকে তখন মার খেতে দেখে সিঁটিয়ে গিয়েছে পড়ুয়ারা।

Advertisement

হামলাকারীদের আর একটা অংশ চড়াও হয় প্রধান শিক্ষকের ঘরে। শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরের নূতনগ্রাম সুভাষিণী হাইস্কুল।

যাঁর উপরে গ্রামবাসীদের এত রাগ, সেই শ্যামল সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছেন। মেয়ের মায়ের লিখিত অভিযোগ পেয়ে পুলিশ গ্রেফতার করে শ্যামলবাবুকে। তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। মুখ খোলেনি ছাত্রীর পরিবারও। বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় বলেন, ‘‘বিকেল পর্যন্ত মারধর, ভাঙচুরের অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’ প্রধান শিক্ষক দীপক শিকদার বলেন, ‘‘আলোচনা চলছে। সেই মতো পরবর্তী পদক্ষেপ হবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: শিশুর ‘যৌন নিগ্রহ’ ঘিরে ধুন্ধুমার কারমেল স্কুলে, ধৃত নাচের শিক্ষক

ভাঙচুরের পরে প্রধানশিক্ষকের ঘর।—নিজস্ব চিত্র।

কিন্তু আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ যে ভাবে শিক্ষকের উপরে চড়াও হলেন, ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের চোখের সামনেই স্যারকে মাটিতে ফেলে পেটানো হল, তার নিন্দায় সরব শিক্ষকদের অনেকেই। বনগাঁর এসডিপিও অনীল রায় বলেন, “এক শিক্ষককে মারধর করার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। কোনও পক্ষ থেকেই এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি।” স্কুলশিক্ষা দফতরের বনগাঁ মহকুমার অতিরিক্ত স্কুল পরিদর্শক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যা-ই অভিযোগ থাক, এ ভাবে মারধর করা উচিত হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দা ও স্কুল কর্তৃপক্ষের কেউ কেউ এর পিছনে অন্য চক্রান্তও দেখছেন।

দিন তিনেক আগে ওই ছাত্রীর মা স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়ের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন শ্যামলবাবু। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার বৈঠক ডাকেন কর্তৃপক্ষ। সময় ঠিক হয় বেলা ১২টায়। তার আধ ঘণ্টা আগেই এক দল যুবক ঢুকে পড়ে তাণ্ডব শুরু করে স্কুলে। খবর পেয়ে বনগাঁ ও গোপালনগর থানার পুলিশ আসে। আসেন পঞ্চায়েত প্রধান। তার আগে এলাকারই কিছু লোক শ্যামলবাবুকে উদ্ধার করে ক্লাসঘরে বসান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন