নোটবন্দির জের কাটিয়ে উঠতে পারেনি রুপো-শিল্প

মৌখালি গোপীনাথপুরের রুপো কারখানার মালিক মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল, বিশ্বনাথ সাঁপুইরা জানান, নোটবন্দির পর থেকে রুপো শিল্পের বাজার শেষ।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

মগরাহাট শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৭ ০২:১১
Share:

কারিগর: এই দৃশ্য আগে ছিল গ্রামের ঘরে ঘরে। নিজস্ব চিত্র

রুপোর গয়না গড়ে বেশ নাম করেছিল মগরাহাটের মৌখালি গ্রাম। গ্রামের মানুষের তৈরি রুপোর গয়না বিভিন্ন রাজ্যেও পাড়ি দিত। কিন্তু এখন তা প্রায় বন্ধ হতে চলেছে। সৌজন্যে, নোটবন্দি।

Advertisement

মগরাহাট ২ ব্লকের অধীনে ধামুয়া উত্তর, দক্ষিণ, হোটর, মর্যাদা, মোহনপুর পঞ্চায়েত এলাকার বহু বছর ধরে রুপো শিল্প চলছে। এলাকার বহু মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত। তাঁদের এখন সংসার চালানো দায় হয়ে গিয়েছে। অন্য কাজের সন্ধানে অনেকেই।

মৌখালি গোপীনাথপুরের রুপো কারখানার মালিক মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল, বিশ্বনাথ সাঁপুইরা জানান, নোটবন্দির পর থেকে রুপো শিল্পের বাজার শেষ। মুষ্টিমেয় কয়েকজন এই শিল্প আঁকড়ে রেখেছেন। ব্যবসা বন্ধ হওয়ায় শ্রমিকেরা অনেকেই পেশা ছেড়ে ভ্যান চালাচ্ছেন, দিনমজুরের কাজ করছেন। এক শ্রমিকের কথায়, ‘‘ব্যবসা ভাল নেই। বন্ধ হয়েছে শিল্প। কিছু না করলে তো সংসার চালাতে পারব না। তাই ভ্যান চালাচ্ছি।’’

Advertisement

এলাকায় প্রায় ৪-৫ হাজার রুপোর অলঙ্কার তৈরির কারখানা ছিল। কলকাতার বড়বাজার থেকে কাঁচামাল কিনে এনে তা গলিয়ে গয়না তৈরি করে ভিনরাজ্যে পাইকারি দরে পাঠানো হত। টাকা নোট বাতিলের ঘোষণার পর থেকেই ব্যবসায় মন্দা দেখা যায়। মাথায় হাত পড়ে শিল্পী থেকে শুরু করে মালিকদের। প্রতিনিয়ত লেনদেন হত লক্ষ লক্ষ টাকার। তা-ও বন্ধ হয়ে যায়।

ব্যবসায়ীরা জানালেন, নগদে কিনতে হত কাঁচামাল। কিন্তু সে সময়ে ব্যাঙ্কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরে যে ক’টা টাকা মিলত, তা শ্রমিকদের দিতে হত। ফলে কাঁচামাল আর কেনা সম্ভব হত না। এ ভাবেই দিনের পর দিন ক্ষতি হয়েছে ব্যবসার। সে সময়ে কেউ কেউ ধার-বাকিতে ব্যবসা চালিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু পরে আর টানতে পারছিলেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন