প্রতীকী ছবি।
লম্বা-চওড়া গাড়িটা গ্রামের পথ দিয়ে যাওয়ার সময়ে লোকে ঘুরে দেখছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাড়ি এসে থামল বসিরহাটের ভবানীপুর দিনান্তিকায়। এ ওকে কনুই দিয়ে ঠেলে বলল, ‘‘দেখো, এই হল বিএমডব্লু। এমন গাড়ি আগে দেখেছো এই এলাকা?’’
অবাক চোখে যখন লোকে বিএমডব্লু দেখতে ব্যস্ত, তখন তার পিছনে এসে দাঁড়াল আরও একটি সুইফট ডিজ্যায়ার।
কারা নামে গাড়ি থেকে, জানতে আশেপাশের লোকজনের চোখ তখন অপেক্ষা করে আছে। যারা নামল গাড়ি থেকে, তাদের চেহারা-ছবিতেও আভিজাত্য। পোশাক-আশাকও ঝাঁ চকচকে।
সেই লোকগুলোই যে কিছুক্ষণের মধ্যে ব্যবসায়ীর বুকে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে টাকার ব্যাগ লুঠ করে পালাবে, তা আন্দাজই করতে পারেনি কেউ। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই কাণ্ডই ঘটেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাট কলেজের কাছে দোকান আছে ভাস্কর চক্রবর্তীর। বাড়ি দিনান্তিকায়। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। সে সময়ে প্রায় ৬ জনের ওই দুষ্কৃতী দলটি দু’টি গাড়িতে এসে তাঁর বাড়ির কাছে দাঁড়ায়। দোকান থেকে টাকা নিয়ে ভাস্করবাবুর বাড়িতে ঢুকছিলেন তাঁর এক কর্মচারী দেবেন্দ্রনাথ ঘটক। ভাস্করবাবু জানান, বাড়িতে ঢোকার মুখে দেবেন্দ্রর উপরে দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র-ভোজালি নিয়ে চড়াও হয়। মারধর করে নালায় ফেলে ব্যাগ ছিনিয়ে পালায়। ভাস্করবাবুর কথায়, ‘‘আমি বাধা দিতে গেলে আমাকেও মারধর করে বুকে আগ্নেয়াস্ত্র ধরে। এরপরে বারাসতের দিকে পালায়।’’
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, দুষ্কৃতীরা বেশ কিছু দিন ধরে ভাস্করবাবুর উপরে নজর রাখছিল। ইটিন্ডা রাস্তার পাশে গাড়ি দু’টি দাঁড় করিয়ে ভাস্করবাবুর বাড়িতে ঢোকার অপেক্ষা করছিল। তবে শুধুমাত্র ছিনতাই করতেই তারা এসেছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘যারা গাড়ি থেকে নেমেছিল, তাদের হাবভাব দেখে মনে হয়েছিল, বড়সড় ব্যবসায়ী। শহর থেকে কোনও কাজে এসেছে। তারাই যে এমন ঘটাবে, কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি।’’