100 Days Work

একশো দিনের বকেয়া মেটাতে শ্রমিকদের দুয়ারে যাচ্ছে প্রশাসন

বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, একশো দিনের কাজের টাকার প্রাপকের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৪৩
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো একশো দিনের কাজে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি যাতে মসৃণ ভাবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যায়, সে জন্য বাড়ি বাড়ি সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। জেলার প্রতিটি ব্লকে তা যাচাই চলছে।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ২৯টি ব্লক এলাকার একশো দিনের প্রকল্পে ২০২১-২২ অর্থবর্ষ এবং ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ৩৭৪ কোটির বেশি টাকা বকেয়া রয়েছে। শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৫ লক্ষ ৯০ হাজার। বকেয়া পারিশ্রমিকের টাকা পেতে শ্রমিকদের যাতে কোনও সমস্যায় না পড়তে হয়, রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর জেলা প্রশাসনকে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে। দফতরের কমিশনার ভিডিয়ো কনফারেন্সে কী করণীয়, তা স্পষ্ট করে দেন। এরপরে প্রতিটি ব্লক জেলার ৩১০টি পঞ্চায়েতের আধিকারিকদের কাছে সেই নির্দেশ পৌঁছে দিতে দ্রুত মাঠে নামতে নির্দেশ দিয়েছেন।

পঞ্চায়েতের কর্মীরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে মজুরি বকেয়া থাকা শ্রমিকদের খোঁজ নিয়ে তথ্য মিলিয়েছেন। ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের সঙ্গে পঞ্চায়েতের সচিব, সহায়ক, নির্মাণ সহায়ক, গ্রাম রোজগার সহায়ক, নির্বাহী সহায়ক, ভিআরপি, ভিএলই সহ সমস্ত ধরনের কর্মীরা মাঠে নেমে কাজ করেছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ হয়েছে।
একশো দিনের কাজের প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসার জয়তী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বকেয়া টাকা শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকতে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে জন্য পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের কর্মীরা তালিকা ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়েছেন।’’ তিনি আরও জানান, শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি সচল রয়েছে কি না, কোনও শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে কি না, এই বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখা হয়েছে। কোনও শ্রমিকের মৃত্যু হলে তাঁর নিকটাত্মীয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগৃহীত তথ্য ব্যাঙ্কগুলিতে পৌঁছে দেওয়া হবে। এরপরে ব্যাঙ্ক শ্রমিকদের অ্যাকাউন্ট যাচাই করবে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, একশো দিনের কাজের টাকার প্রাপকের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ২১ লক্ষের বদলে ওই টাকা পাবেন সাড়ে ২৪ লক্ষ জন। তাঁদের সবাইকে টাকা দিতে আরও অর্থের দরকার। রাজ্য সরকারের সেই ব্যবস্থা করতে কিছুটা সময় লাগবে। তাই ২১ ফেব্রুয়ারির বদলে ১ মার্চ থেকে টাকা দেওয়া শুরু হবে। এই উদ্যোগকে যদিও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। দলের মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার জেলা আহ্বায়ক অরুণাভ দাস বলেন, ‘‘ভোটের জন্য রাজনীতি চলছে। রাজ্যের কোষাগারে এত অর্থ নেই যে একশো দিনের বকেয়া টাকা দেবে। কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। আগে তো এ ভাবে যাচাই করে টাকা দেওয়া হত না। দুর্নীতি প্রকাশ না পায়, সে জন্যই বাড়ি বাড়ি ঘুরে সঠিক তালিকা তৈরি হচ্ছে।’’

তৃণমূলের সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার যুব সভাপতি বাপি হালদার অবশ্য বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় দল একাধিক বার রাজ্যে এসেও কোনও দুর্নীতি খুঁজে পায়নি। তারপরেও ওরা রাজনৈতিক ভাবে তৃণমূলের সঙ্গে না পেরে ওঠে,গরিব শ্রমিকদের পেটের ভাত কেড়ে নিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী শ্রমিকদের কথা ভেবে তাঁদের বকেয়া মেটানো শুরু করেছেন। এটা বিরোধী দলগুলির কোনও ভাবে সহ্য হচ্ছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন