West Bengal Panchayat Election 2023

ভোট-আয়োজনে হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের পরিকাঠামো নিয়ে চিন্তায় কর্তারা

হিঙ্গলগঞ্জের কালীতলা, যোগেশগঞ্জ, দুলদুলি, সাহেবখালি পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে পরিস্রুত পানীয় জলের সঙ্কট রয়েছে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২৩ ১০:০৪
Share:

ভেঙে যাওয়া কালভার্ট এর কাজ এখনও সম্পূর্ণ হল না। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP

সর্বত্র পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে প্রশাসনিক তৎপরতা তুঙ্গে। কিন্তু হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের পরিকাঠামোগত নানা সমস্যা চিন্তায় ফেলেছে ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের। কী ভাবে সব দিক সামাল দেবেন, ভেবে পাচ্ছেন না তাঁরা।

Advertisement

সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন হওয়ার জন্য ন্যূনতম প্রয়োজন রাস্তা, জল, বিদ্যুৎ। কিন্তু সে সব কই! এর সঙ্গে মোবাইল ‘শ্যাডো জ়োন’ (যেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেট সংযোগ ঠিকমতো মেলে না) আরও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুলদুলি পঞ্চায়েতের সাঁতরা, সাহেবখালি গ্রাম, কালীতলা পঞ্চায়েতের সামশেরনগরের একাধিক গ্রাম, সাহেবখালি পঞ্চায়েতের চাড়ালখালি, ছোট সাহেবখালি, যোগেশগঞ্জ পঞ্চায়েতের হেমনগর— সব জায়গাই ‘মোবাইল শ্যাডো জ়োন’। সব মিলিয়ে ৯টি বুথ আছে এখানে।

পঞ্চায়েত ভোটে প্রতি বুথে সিসিক্যামেরা বসানোর নির্দেশ রয়েছে হাই কোর্টের। ফুটেজ সংরক্ষণের কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু ওই সব ‘মোবাইল শ্যাডো জ়োনে’ তা কী করে সম্ভব সেই প্রশ্নও সামনে আসছে। ব্লক প্রশাসনের কর্তারা মনে করছেন, সিসিক্যামেরার পরিবর্তে ভিডিয়োগ্রাফার দিয়ে ভিডিয়ো করাতে হবে। কিন্তু গ্রামে অত ভিডিয়ো ক্যামেরা এবং ভিডিয়োগ্রাফার পাওয়া নিয়ে তাঁরা সংশয়ে।

Advertisement

এ ছাড়া হিঙ্গলগঞ্জের কালীতলা, যোগেশগঞ্জ, দুলদুলি, সাহেবখালি পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে পরিস্রুত পানীয় জলের সঙ্কট রয়েছে। নির্বাচনের সময়ে সেখানে ভোটকর্মীদের জন্য সব বুথে পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে হবে হবে প্রশাসনকে। দুলদুলি, যোগেশগঞ্জ, সাহেবখালি, কালীতলা ও গোবিন্দকাটি— এই পাঁচ পঞ্চায়েত এলাকায় লো-ভোল্টেজের সমস্যাও রয়েছে। গ্রামবাসীরা জানান, গরমকালে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত পাখা ঘুরতে চায় না।

তীব্র গরমে ভোট হচ্ছে। সব বুথে ফ্যানের ব্যবস্থা করা গেলেও লো ভোল্টেজের সমস্যার সঙ্গে কী করে পেরে উঠবে প্রশাসন, সেটাই চিন্তায় ফেলছে কর্তাদের।

ব্লকের একাধিক পঞ্চায়েতে মাটির বা ইটের রাস্তা বেহাল। বৃষ্টি হলে গাড়ি চলে না। ভোটের দিন ঝড়বৃষ্টি হলে সেই পরিস্থিতিও সামাল দিতে হবে। ভোটকর্মী ও ভোটারদের যাতায়াতের বিকল্প উপায় খুঁজছেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। দু’মাস আগে ব্লকের রূপমারি দক্ষিণ বাঁশতলা মান্নার মোড়ের কাছে হাসনাবাদ-শীতলিয়া রোডে ভেঙে পড়া কালভার্টের কাজ এখনও শেষ হয়নি। ফলে, তা আর ক’দিনে শেষ হবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে।

কালীতলা পঞ্চায়েতের সামশেরনগরের বাসিন্দা সুভাষ বিশ্বাস বলেন, “আমরা বহুদিন ধরে মোবাইলের নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটের সমস্যায় ভুগছি। সেই সঙ্গে পানীয় জল ও বিদ্যুতের সমস্যাও রয়েছে। এতদিনেও সমস্যা সমাধান হলো না।” এই পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান দীপ্তি মণ্ডল বলেন, “বিদ্যুতের ভোল্টেজের সমস্যা, কিছু অংশে পানীয় জলের সমস্যা ও কয়েকটি রাস্তার সমস্যা আছে ঠিকই। তবে পাঁচ বছরে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। আশা করি, ভোটের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করে ফেলা যাবে।”

গোবিন্দকাটি পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান সঞ্জীব মণ্ডল বলেন, “ভোটের দিন বিদ্যুৎ নিয়ে চিন্তা থাকছে। বৃষ্টি হলে কয়েকটি রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচলে সমস্যা হয়ে যাবে। এটা নিয়ে একটু চিন্তিত আছি।’’

হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল বলেন, “আমাদের হাতে কোনও জাদুকাঠি নেই যার স্পর্শে সব সমস্যার সমাধান করে ফেলব। অনেক সমস্যার সমাধান হয়েছে। যা হল না তা আগামিদিনে করার চেষ্টা করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন