কিডনির অসুখেও দমেনি রাধারানি

পেশায় অটোচালক ছিলেন রাধারানির বাবা দুলালচন্দ্রবাবু। মেয়ের চিকিৎসার জন্য বাজারে প্রচুর দেনা হয়ে গিয়েছিল। ২০১২ সালে হৃদরোগে মারা যান দুলালবাবু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৭ ১৬:১৫
Share:

রাধারানি বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র

ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছে। তার উপরে নিজের কিডনির অসুখ। এত সব প্রতিবন্ধকতার সামনে অবশ্য হার মানেনি ক্যানিঙের রায়বাঘিনি হাইস্কুলের ছাত্রী রাধারানি বিশ্বাস। এ বার মাধ্যমিকে সে ৪৩৬ নম্বর পেয়েছে।

Advertisement

পেশায় অটোচালক ছিলেন রাধারানির বাবা দুলালচন্দ্রবাবু। মেয়ের চিকিৎসার জন্য বাজারে প্রচুর দেনা হয়ে গিয়েছিল। ২০১২ সালে হৃদরোগে মারা যান দুলালবাবু। স্বামী মারা যাওয়ার পরে স্ত্রী মহারানিদেবী দেনার টাকা শোধ করতে সোনারপুরের গঙ্গাজোয়ারার শ্বশুরবাড়ি থেকে পাওয়া জমি বিক্রি করে দেন। তারপরে মেয়েকে নিয়ে ক্যানিঙের মালিরধারে বাপের বাড়িতে চলে আসেন। মেয়ের চিকিৎসা ও সংসার চালাতে পরিচারিকার কাজ শুরু করেন তিনি।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কিডনির অসুখের কারণে মাঝে মধ্যে শরীর ফুলে যায় রাধারানির। তখন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এ রকম প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও পড়াশোনা থেকে বিরত থাকেনি সে। সারা দিনে ৯-১০ ঘণ্টা পড়াশোনা করত। কোনও গৃহশিক্ষক ছিল না। পরীক্ষার আগে স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক ও পাড়ার এক দাদা তাকে পড়া দেখিয়ে দিত। অভাবের সংসারে প্রয়োজনীয় সব জিনিস মা কিনে দিতে পারতেন না। মামা অরূপ হালদার সাধ্যমতো তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করতেন। মহারানিদেবী বলেন, ‘‘মেয়ের তেমন কোনও শখ ছিল নেই। অভাবটা বুঝতে পারে। ও চায়, পড়াশোনা করে আরও বড় হতে। বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে মেয়ে চিকিৎসক হতে চায়।’’

Advertisement

আর সাহসী কিশোরীটির কথায়, ‘‘চোখের সামনে বাবাকে মরতে দেখেছি। সে ভাবে চিকিৎসাই করানো যায়নি। তা ছাড়া, আমার চিকিৎসা করাতে গিয়ে মাকে কত কষ্ট করতে হয়। তাই আমার ইচ্ছে, চিকিৎসক হয়ে গরিব মানুষকে বিনা পয়সায় চিকিৎসা করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন