পাহারা: কলেজের সামনে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
জয়নগরের কলেজে গোলমালের ঘটনায় আরও দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই নিয়ে শুক্রবারের সংঘর্ষের ঘটনায় ধরা পড়ল ৫ জন।
শনিবার কলেজের পরিস্থিতি ছিল থমথমে। ২০ শতাংশ মতো পড়ুয়া এসেছিলেন বলে জানালেন অধ্যক্ষ সত্যব্রত সাহু। কিছু ক্লাস হয়েছে। অধ্যক্ষের মতে, আতঙ্কের কারণেই এ দিন হাজির কম ছিল। শুক্রবারের ঘটনায় পুলিশকে দুষে তিনি বলেন, ‘‘যা ঘটেছে, পুলিশের সামনেই। পুলিশ ইচ্ছে করলে বহিরাগতদের আটকে দিতে পারত। কিন্তু সেটা তারা করেনি। তা ছাড়া, গণ্ডগোলের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে বলে পুলিশকে আগেই জানিয়েছিলাম।’’
শনিবার সকাল থেকে অবশ্য কলেজের গেটের সামনে ও ভিতরে প্রচুর পুলিশ ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, সংঘর্ষ থামাতে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত পাঁচজন বহিরাগত ধরা পড়েছে। বাকিদের তল্লাশি চলছে।
ছাত্র ভর্তিতে টাকার লেনদেন চলছে বলে রাজ্যের আরও নানা কলেজের মতো অভিযোগ উঠেছে জয়নগরের দক্ষিণ বারাসত ধ্রুবচাঁদ কলেজেও। সেই টাকার বখরা নিয়েই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শুক্রবার মারপিট বাধে বলে অভিযোগ করছেন অনেকেই।
কলেজে ছাত্র সংসদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে আকচাআকচির কথা মানছে তৃণমূলের কিছু নেতাকর্মীও। তাঁরা জানালেন, তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দলের সঙ্গে আছেন স্থানীয় বাসিন্দা তথা প্রাক্তন ব্লক সভাপতি গৌর সরকার। তাঁর হাত ধরেই ২০১৬ সালের নির্বাচনে তৃণমূলের বিধায়ক হয়েছেন বিশ্বনাথ দাস। কিন্তু তারপর থেকে দু’জনের সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়। যার প্রভাব পড়ছে নানা ক্ষেত্রে। পঞ্চায়েত ভোটেও একজন অন্যের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়েছেন বলে অভিযোগ। কলেজের রাজনীতিতেও দুই নেতার দুই গোষ্ঠীর মধ্যে রেষারেষি স্পষ্ট।শাসক দল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ওই কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ছাত্রসংসদের দখল নেয়। কিন্তু নানা সময়ে গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। ছাত্র ভর্তিতে টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে যে অভিযোগ উঠছে, তার বখরা নিয়েই শুক্রবার দু’পক্ষের গোলমাল বাধে বলে অভিযোগ। বহিরাগতরা বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে কলেজ চত্বরে দাপিয়ে বেড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, দুই নেতার তোলাবাজির জেরে সকলে অতিষ্ঠ। কলেজেও পড়াশোনা লাটে ওঠার জোগাড়।
তৃণমূল নেতা গৌর সরাসরি দায় চাপিয়েছেন বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর উপরে। তিনি বলেন, ‘‘বিধায়কের ছত্রচ্ছায়ায় থাকা বহিরাগত দুষ্কৃতীরাই হামলা চালিয়েছে। কলেজে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে।’’ অন্য দিকে, বিধায়ক বিশ্বনাথ দাসের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য, ‘‘কলেজের সঙ্গে আমার কোনও যোগাযোগ নেই। এ বিষয়ে আমি কিছু বলব না।’’