বিরিয়ানি খেয়ে বিদায় নিল পড়ুয়া

শুক্রবার বার্ষিক পরীক্ষার ফল বেরোনোর পরেই প্রাইমারি স্কুলের গণ্ডি পেরোবে পড়ুয়ারা। পঞ্চম শ্রেণিতে হাইস্কুলে ভর্তি হবে তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:২৪
Share:

খাওয়া-দাওয়া: স্কুল চত্বরে। নিজস্ব চিত্র

সকাল সকাল পড়ুয়ারা স্কুলে হাজির। আজ স্কুলে ডিম, খিচুরি, সোয়াবিন নয়। খাওয়া হবে চিকেন বিরিয়ানি!

Advertisement

শুক্রবার বার্ষিক পরীক্ষার ফল বেরোনোর পরেই প্রাইমারি স্কুলের গণ্ডি পেরোবে পড়ুয়ারা। পঞ্চম শ্রেণিতে হাইস্কুলে ভর্তি হবে তারা। ছাত্রছাত্রীদের বিদায় সংবর্ধনা দিতে দেগঙ্গার কুচেমোড়া এফপি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেদের টাকায় বিরিয়ানি খাওয়ার আয়োজন করেছিলেন। পাশাপাশি স্কুলের সব পড়ুয়ারাই এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল।

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কানাইলাল দে বলেন, ‘‘এ দিন আমরা চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য অন্য রকম কিছু করতে চেয়েছিলাম। একটু ভাল খাওয়ানোর আয়োজন করা হয়েছে মাত্র। আমাদের তরফ থেকে ওদের জন্য অনেক ভালবাসা রইল।’’ তিনি জানান, আট বছর ধরে প্রতি বছর চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের আমরা স্কুল থেকে বিদায়ের আগে সংবর্ধনা দিই। আগের বার মাংস ভাতের আয়োজন করা হয়েছিল।

Advertisement

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ারা সংখ্যা ২৭ জন। অন্য সব ক্লাস মিলিয়ে রয়েছে ১৬৩ জন। শুধু চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের খাওয়ালে সেটা ভাল দেখাবে না। সে কারণে সব পড়ুয়ার জন্য এ দিন বিরিয়ানির ব্যবস্থা ছিল।

স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের পাশে বসিয়ে পেট ভরে খাওয়াচ্ছেন। অন্য স্কুলে গিয়ে কেমন ভাবে লেখাপড়া করতে হবে, তাদের ব্যবহার কেমন হবে সে সম্পর্কেও তাঁরা তাদের পরামর্শ দিচ্ছেন। বিরিয়ানির পাশাপাশি পড়ুয়াদের জন্য স্কুলে এ দিন ম্যাজিক শো-এর আয়োজন করা হয়েছিল। যা দেখে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ারা মুগ্ধ।

চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মায়িশা ফারজান, নাতিশা খাতুনেরা বলে, ‘‘স্যার, দিদিমনিরা আমাদের খুব ভালবাসেন। পড়া না পারলে বুঝিয়ে বলেন। কখনও মারধর করেননি। আমরা মাঝে মধ্যে স্কুলে এসে তাঁদের সঙ্গে দেখা করব।’’ অভিভাবক আলাউদ্দিন মণ্ডল ও নুরনাহার বিবি বলেন, ‘‘ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে আমরা নিশ্চিন্তে থাকি। শিক্ষক-শিক্ষিকারা ওদের সন্তানের মতো ভালবাসেন। ছেলেমেয়েদের কোনও অসুবিধা বুঝলে অভিভাবকদের স্কুলে ডেকে বুঝিয়ে বলেন।’’

স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ৭ জন। পুরনো পড়ুয়াদের বিদায় জানাতে গিয়ে কেউ চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন