প্রহৃত: মারা হচ্ছে সেই শিক্ষককে। ফাইল চিত্র।
তাঁর নামে তখনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি থানায়। মৌখিক ভাবে যে অভিযোগটুকু উঠেছিল, তার সাফাই দেওয়ার সুযোগও দেওয়া হয়নি।
তার আগেই একদল লোক স্কুলে ঢুকে যে ভাবে স্যারকে মাটিতে ফেলে কিল-চড়-ঘুষি মারল, উইকেট দিয়ে পেটাল, সে কথা মনে করে এখনও শিউরে উঠছে ছোট ছোট ছেলেমেয়েগুলো।
গোপালনগরের নূতনগ্রাম সুভাষিণী হাইস্কুলের বাংলার শিক্ষক শ্যামল সাহাকে মারধরের ওই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার পথে নেমেছেন স্কুলের শিক্ষক, পড়ুয়ারা। অভিভাবকদের একাংশও পা মেলান। মুখে কালো কাপড় বেঁধে, কালো ব্যাজ এঁটে মিছিলে হেঁটেছে স্কুলের পড়ুয়া সুমনা মণ্ডল, সঙ্গীতা মণ্ডলরা। তাদের কথায়, ‘‘স্যার কী করেছেন, আমরা জানি না। কিন্তু ওঁকে যে ভাবে মারধর করা হল স্কুলের মধ্যেই, সেটা আমাদের খুব খারাপ লেগেছে।’’ অভিভাবক ক্ষমা মণ্ডল, ফুলঝুরি মণ্ডলদের কথায়, ‘‘ওঁর দোষ কী, আমরাও জানি না। দোষ করে থাকলে সে জন্য আইন-আদালত আছে। কিন্তু সে সবের তোয়াক্কা না করে যে অমানুষিক ভাবে মারধর করা হল একজন শিক্ষককে, সেটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না।’’
অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগকে কেন্দ্র করে শুক্রবার ওই ঘটনা ঘটে। প্রধান শিক্ষকের ঘরে ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। স্কুলের তরফে মারধর এবং ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। অন্য দিকে, ছাত্রীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবারই গ্রেফতার করা হয়েছিল শ্যামলবাবুকে। তাঁর বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ দিন বনগাঁ আদালতে তোলা হলে বিচারক অভিযুক্ত শিক্ষককে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালতের পথে শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। কেন আমার সঙ্গে এমন ঘটল, জানি না।’’
‘নিগৃহীতা’ ছাত্রীর পরিবার মুখে কুলুপ এঁটেছে। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, শিক্ষকের উপরে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত কয়েকজন যুবকের অভিভাবক স্কুলে এসেছিলেন। ছেলেদের হয়ে ক্ষমা চেয়ে গিয়েছেন তাঁরা।