খোঁজ-খবর: সাগরে সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ছবি: শান্তশ্রী মজুমদার
মঙ্গলবারই সাগরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। পর দিন থাকবেনও সেখানে। অন্যান্য সরকারি কর্মসূচি ছাড়াও সাগর মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার কথা তাঁর। তার আগে মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের এক মন্ত্রী প্রশ্ন তুলে দিলেন মেলায় জেনারেটর ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে।
শনিবার সাগরে এসেছিলেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বিদ্যুৎ দফতরের পরিকাঠামো সাগরে পূর্ণমাত্রায় রয়েছে গত কয়েক বছর থেকেই। কিন্তু মেলার সময়ে বাইরে থেকে প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা দিয়ে জেনারেটর ভাড়া করতে হচ্ছে। তিনি বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের রীতিমতো ভর্ৎসনা করেন।
সুব্রতবাবু এ দিন বৈঠকে বিদ্যুৎ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের বলেন, ‘‘আপনাদের পুরো পরিকাঠামো তৈরি রয়েছে। গত বছর আপনারা নিজেরা দায়িত্ব নেবেন বলার পরেও কেন জেনারেটর বাইরে থেকে ভাড়া করতে হচ্ছে? কেন এই টাকা সরকার না পেয়ে বাইরের লোক পাবে?’’
গত বছরই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সুব্রতবাবু। তাঁর দাবি, মেলা নিয়ে এ বছরই কয়েকটি বৈঠকে তাঁকে বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন, এ বার মেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্ব পুরোপুরি সংশ্লিষ্ট দফতরই নেবে। তারপরেও জেনারেটর বাইরে থেকে ভাড়া করা নিয়ে ক্ষুব্ধ সুব্রতবাবু। শুক্রবারই বিদ্যুৎ দফতর থেকে একটি চিঠি তাঁর দফতরে পাঠিয়ে বলা হয়েছে, গত বছরের মতোই অর্থাৎ, জেনারেটর বাইরে থেকে নিয়েই মেলার সময়ে বিকল্প হিসেবে রাখা হবে।
কয়েক বছর আগে পর্যন্ত বিদ্যুৎ না পৌঁছনোয়, পুরো মেলার বিদ্যুৎ জেনারেটর দিয়েই চালানো হত। এ বছর থেকে মেলায় যাতে জেনারেটর না লাগে, তার ব্যবস্থা করার কথা। কিন্তু তবু লাগছে জেনারেটর। তা নিয়েই আপত্তি তোলেন সুব্রতবাবু। বলেন, ‘‘বাড়তি টাকার দায়িত্ব কেন রাজ্য সরকার নেবে। আর তা যদি হয়, তা আগে থেকে কেন জানানো হয়নি?’’
কিছু দিন আগেই মেলার বিদ্যুৎ দফতরের প্রস্তুতি দেখে গিয়েছেন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মেলার বৈঠকে আলোচনার পরেই এ রকম ব্যবস্থা চালু রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘এত বড় একটা মেলায় ডিজেল জেনারেটর বিকল্প হিসেবে রাখতেই হয়। মুখ্যমন্ত্রী যে রকম বলেছেন, সে রকম ভাবেই আমাদের দফতর থেকে করা হচ্ছে। এ জন্য ইঞ্জিনিয়ারকে বকাবকি করে কী হবে?’’ মেলার সময় এ বারও ৫টি জেনারেটর বাইরে থেকে ভাড়া করে আনার কথা।
ড্রেজিং নিয়েও এ দিন উদ্বেগ প্রকাশ করেন সুব্রতবাবু। একটি ড্রেজার মুড়িগঙ্গা থেকে পলি কেটে তা নদীতেই ফেলে দিচ্ছে। সুব্রতবাবু প্রশ্ন তোলেন, এতে কী লাভ হচ্ছে? সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা মন্ত্রীকে বোঝান, মুড়িগঙ্গায় জলের গভীরতা, স্রোতের টান দেখেই কেন্দ্রীয় আন্তর্দেশীয় জলপথ কর্তৃপক্ষের কর্তারা পলি ফেলার জায়গা বেছেছেন। তা নিয়ে সমস্যা হবে না। প্রায় ১০ দিন হল দু’টি ড্রেজার মুড়িগঙ্গায় পলি কাটার কাজ শুরু করেছে। সঙ্গে ৪টি পলি কাটার মেশিন। শনিবার আরও চারটি স্যান্ড ড্রেজার এসে পৌঁছনোর কথা ছিল মুড়িগঙ্গায়। কিন্তু সেগুলি আসেনি। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কাজ, মেলার সময়ে বেশ কিছু রাস্তা, পানীয় জল, শৌচাগারের মতো কয়েকটি বিষয় নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে।