চলছে বিকিকিনি। নিজস্ব চিত্র।
রেওয়াজটা খুব পুরনো নয় বনগাঁয়। তবে এ বছর ধনতেরসে বিক্রিবাট্টায় মুখে হাসি ফুটেছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের।
শুক্রবার সকাল থেকেই মহকুমার নানা প্রান্তে, বিশেষ করে বনগাঁ শহরে সোনার দোকানগুলিতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্যবসায়ীরা জানালেন, বছর দু’তিন হল এখানে ধনতেরসে সোনা-রুপো কেনার চলটা জনপ্রিয় হচ্ছিল। আর এ বারই প্রথম ভাল ব্যবসা করেছেন অনেকেই।
দোকানগুলিও ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। সাধারণ মানুষ যাতে নিরাপদে সোনার দোকানে গিয়ে গয়না কিনে নির্ভয়ে বাড়ি ফিরতে পারেন, সে জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় (যেখানে সোনার বড় দোকানপাট আছে) সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রয়েছে মোবাইল টহলও।
গয়নার মজুরির উপরে ছাড়, উপহারেরও ছড়াছড়ি। রাইস কুকার, ট্রলি ব্যাগ, কাপ-প্লেটের সেট তো বটেই, উপহারের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে মাইক্রোওভেন, ফ্রিজও।
শহরের অন্যতম বড় স্বর্ণ ব্যবসায়ী তথা বঙ্গীয় স্বর্ণ ব্যবসায়ীর সমিতির বনগাঁ মহকুমার সম্পাদক বিনয় সিংহ। তিনি জানালেন, এ বার ধনতেরসে বিক্রি ভালই। শহরের অন্যতম প্রতিষ্ঠিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী তারকচন্দ্র বসুও জানালেন একই কথা। আর এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী তথা বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সহ সম্পাদক দিলীপ মজুমদারের কথায়, ‘‘বছর আটেক আগে বনগাঁয় ধনতেরস শুরু হলেও এ বারই প্রথম ঠিকঠাক বেচাকেনা হচ্ছে। সামনে বিয়ের মরসুম। সে কারণেও মানুষ এই শুভদিনে গয়না কিনে রাখছেন।’’
হালকা গয়নার দিকেই অবশ্য ঝোঁক বেশিরভাগ ক্রেতার, জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবয়ারীরা জানালেন, এ বার বাজার ভাল হওয়ার একটা বড় কারণ, কৃষিপ্রধান বনগাঁ মহকুমায় প্রতি বছর দুর্গাপুজোর সময়ে ভারী বৃষ্টিতে বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায় চলে যায়। এ বার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল কম। ফলে মানুষের হাতে টাকার জোগান ভাল।
এ দিন সন্ধ্যায় দোকানে গয়না কিনছিলেন আমলাপাড়ার বাসিন্দা পিয়ালি পোদ্দার। বললেন, ‘‘কাগজে পড়ে পড়ে বা টিভিতে দেখে আমাদেরও বিশ্বাস জন্মেছে, ধনতেরসে সোনা-রূপো কেনা শুভ। তাই দোকানে চলে এসেছি। সামান্য কিছু হলেও অবশ্যই কিনব।’’