ছোটদের স্কুলমুখী করতে। ছবি: নির্মল বসু
খেতখামারে কাজ করার সামান্য আয়ে যখন সংসার চালানোটাই দায় হয়ে পড়েছে, তখন আর মেয়েকে পড়াশোনা না করিয়ে বিয়ে দেবেন বলে ভাবছিলেন শিবপদবাবু। সে সময়েই পাশে পেয়ে যান গ্রামের নিতাইপদ রায়কে। ছোট মেয়ে সুজাতার হাতে বই-পোশাক তুলে দিয়ে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি করে দেন তিনি।
এ ভাবে বই-পোশাক দিয়ে শিশু-কিশোরদের স্কুলমুখী করার চেষ্টা করে চলেছে হেমনগরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
হিঙ্গলগঞ্জের একেবারে শেষ প্রান্তে হেমনগর উপকূলবর্তী থানার কালীতলা বাজার। বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে কুড়েখালি খাল। যার ও পাড়ে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গল। মাঝে মধ্যেই জাল ঘেরা জঙ্গলের ভিতর থকে বেরিয়ে আসে বাঘ। হরিণ, বাঁদর, বুনো শুয়োর তো হামেশাই দেখা যায়।
কালীতলা এলাকার বড় অংশের মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করে। রুটি-রুজি বলতে জঙ্গলের খাঁড়িতে মাছ ধরা, মৌচাক ভেঙে মধু সংগ্রহ কিংবা কাঁকড়া ধরা। বহু পরিবারই ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠাতে চান না। অনেকে অভাবের কারণে পেরেও ওঠেন না। এই সব পরিবারগুলির পাশেই থাকার চেষ্টা করেন তাঁরা, জানালেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ নিতাইপদ রায়।
তাঁর কথায়, ‘‘টাকার অভাবে আমি নিজে বেশি দূর পড়াশোনা করতে পারেনি। তাই চাই, সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার এই সব ছেলেমেয়েরা যেন কোনও ভাবেই স্কুলছুট না হয়।’’ খবর পেলেই সংগঠনের সকলকে নিয়ে স্কুলছুটদের পাশে দাঁড়ান তাঁরা।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে গত সাত বছর ধরে সংগঠনের এই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানালেন স্থানীয় বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল, পঞ্চায়েত প্রধান শ্যামল মণ্ডল, অতিরিক্ত প্রাক্তন বিদ্যালয় পরিদর্শক মধুসূদন লালারা।